নিউজ ডেস্কঃ দেশের ৬৪ জেলায় এখন ডেঙ্গু রোগীর থাবা। এবার ঢাকার বাইরেই ডেঙ্গু রোগীর দাপট বেশি। গ্রামে ডেঙ্গু রোগী বাড়লেও গুরুতর রোগীদের চিকিৎসা নেই জেলা পর্যায়ের অনেক হাসপাতালে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার বাইরে চিকিৎসা ব্যবস্থায় যথেষ্ট ঘাটতি থাকায় রোগীরা বেশি ঢাকামুখী হচ্ছেন। মুমূর্ষু রোগীদের অনেকে মারা যাচ্ছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৪৪৪ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটির ৩৩৬ জন এবং ঢাকা সিটির বাইরের ১০৮ জন। একই সময়ে আরও ২ হাজার ২৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৮৯৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৩৮৯ জন। এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৪ হাজার ৩১২ জন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে দেশের বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)-এর সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গুতে মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকার বাইরে চিকিৎসা ব্যবস্থায় যথেষ্ট ঘাটতি থাকায় রোগীরা বেশি ঢাকামুখী হচ্ছেন। তিনি বলেন, করোনার সময় প্রতিটি জেলা হাসপাতালে আইসিইউ দেয়ার কথা বলেছিল সরকার। কিন্তু তা বাস্তবায়ন দেখছি না। হাসপাতালে লোকবল নেই, বেড নেই। অনেক হাসপাতালেই রোগীকে মশারিও দেয়া হয় না। এই চিকিৎসক স্থানীয় সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগকে ডেঙ্গু মোকাবিলায় আরও উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, বছরের শুরুতেই তাদেরকে প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি দ্রুতই ডেঙ্গু মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোকে ভালোভাবে প্রস্তুত করার পরামর্শ দেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত ১৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৩ জন, মার্চে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১১ জন এবং এপ্রিলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪৩ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫৬ জন এবং মারা গেছেন ৩৪ জন। জুলাইতে শনাক্ত ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন এবং মারা গেছেন ২০৪ জন। আগস্টের ১৭ দিনে ৪২ হাজার ৪৮০ জন শনাক্ত এবং প্রাণহানি ১৯৩ জনের। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি হবে। কারণ অনেক ডেঙ্গু রোগী বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন, তাদের হিসাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খাতায় নেই।