স্টাফ রিপোর্টার:

বিকাশ প্রতারনার ফাঁদে পড়ে ৩১ হাজার টাকা হারালেন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের এক দরিদ্র কৃষক ছিদ্দেক আলী। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সন্ধায়। প্রতিকার চেয়ে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক ছিদ্দেক।

ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, গত ৫ জুলাই শুক্রবার  প্রতারনার শিকার ছিদ্দেকের বিকাশ নম্বর ০১৭৭০২২৯০৩০ এ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ ঘটিকার সময় তার ভগ্নিপতি মাসুক মিয়া ওমান থেকে ৩১ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়েছিল তার বোনের বিভিন্ন ঋনের কিস্তি ও অন্যান্য পাওনাদিসহ স্বাভাবিক সংসার খরচ মিটানোর জন্য কিন্তু প্রতারক চক্র বিকাশে মোটা অংকের অর্থ প্রেরনের তথ্যটি সংগ্রহ করে ছিদ্দিকুরের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে প্রতারক নিজেকে বিকাশের কর্মকর্তা পরিচয় দেয় এবং ছিদ্দেককে জানায় যে, এইমাত্র তার মোবাইলে বিদেশ থেকে ৩১ হাজার টাকা বিকাশ পাঠানো হয়েছে এবং অন্যের একটি বিকাশ নম্বর বন্ধ করতে ভুলবশত ছিদ্দেকের বিকাশ নম্বরটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যার জন্য সে আন্তরিকভাবে দু:খ প্রকাশ করে জানায় যে, ভুলবশত ছিদ্দেকের বিকাশ নম্বরটি বন্ধ করায় আর টাকা উঠাতে পারবে না। ছিদ্দেক তার কথায় বিশ্বাস করেন এবং তার টাকাগুলো দ্রুত উঠিয়ে বোনের কাছে ফেরত দেয়ার আকুতি জানান। এ সময় বিকাশ প্রতারক তাকে জানায় যে, আমি আপনার বিকাশ একাউন্টটি ঠিক করতে আপনার নাম্বারে একটি মেসেস পাঠাচ্ছি। আপনি সে নাম্বারগুলো আমাকে বললে বন্ধ হয়ে যাওয়া আপনার বিকাশ নম্বরটি ঠিক হয়ে যাবে। আপনি সহজেই বিদেশ থেকে পাঠানো টাকাগুলো উত্তোলন করে বোনকে দিতে পারবেন। বিকাশ প্রতারক যে নাম্বারগুলো থেকে ছিদ্দেককে ফোন করেছিল সেগুলো হচ্ছে ঘটনার দিন সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭ ঘটিকায় ০১৯০৭৩২৫৯৬২ ও ০১৯৮৯৭৭১৬৫৯   এবং পরবর্তীতে জানতে পারি যে, দুটি নাম্বার থেকে ৩১ হাজার টাকা ক্যাশ আউট করা হয়েছে। গত ০৫/০৭/২০২৪ইং তারিখ রাত ৮টা ২ দুই মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে ০১৭৭০২২৯০৩০ থেকে ০১৯৭৭৩২৬০৩২ বিকাশ এজেন্ট নম্বর থেকে ২৫ হাজার টাকা এবং ০১৭৭০২২৯০৩০ থেকে ০১৮৯৭৯২৯৭১৮ এজেন্ট নম্বর থেকে ৫৮০০ টাকা ৮টা ১০ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডে ক্যাশ আউট করে নেয় প্রতারক চক্র। বর্তমানে বিকাশ প্রতারকের ব্যবহৃত ০১৯০৭৩২৫৯৬২ ও ০১৯৮৯৭৭১৬৫৯  বন্ধ থাকলেও বিকাশ এজেন্ট নাম্বার ০১৯৭৭৩২৬০৩২ ও ০১৮৯৭৯২৯৭১৮ চালু রয়েছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা একটু সচেতন ও তৎপর হলেই এই প্রতারক চক্রকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে ভুক্তভোগীদের অভিমত।

প্রতারনার শিকার ছিদ্দেক সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় সাধারন ডায়রী করতে গেলে পুলিশ জিডি এন্ট্রি না করে অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। অজ্ঞাত নামা ব্যক্তিদের আসামী করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগটি সদর থানার এসআই কামাল হোসেন তদন্তভার গ্রহন করেছেন।

এ ব্যাপারে প্রতারনার শিকার ছিদ্দেক জানান, আমি খুবই গরীব মানুষ। আমার বোন জামাই ওমান থেকে টাকাগুলো বিকাশে পাঠিয়েছিল। বিকাশ প্রতারকের কথায় বিশ্বাস করে কয়েকটি নাম্বার চাপায় আমার টাকাগুলো চুরি হয়ে যায়। আমি ন্যায় বিচারের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের সহযোগিতা চাই।

এ ব্যাপারে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই কামাল হোসেন জানান, অভিযোগটি এখনও আমার হাতে আসে নাই। অভিযোগটি হাতে পাওয়ার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো: খালেদ চৌধুরী জানান, অভিযোগটি পেয়েছি। বিকাশ প্রতারকদের কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে এএসআই কামাল কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আশা করছি খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রতারকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারব।