নিউজ ডেস্ক :: ‘রমজানের পবিত্রতা রক্ষার জন্যে’ সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) দেয়া একটি বিজ্ঞপ্তি নিয়ে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সিসিকের কর শাখা থেকে দেয়া ওই বিজ্ঞপ্তিতে রমজান মাসে নগরের অভ্যন্তরে বিজ্ঞাপনী বোর্ড, পোস্টার, ব্যানার, গাড়ির বডিসহ যে কোন বিজ্ঞাপন প্রচারে কোন ছবি ব্যবহার না করার অনুরোধ করা হয়। এই ‘অনুরোধ’ না মানলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিটিতে।
১৩ মার্চ (সোমবার) সিলেটের কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকায় সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান সাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এনিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
প্রতিবছরই রমজান মাসে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নগরের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার, বিলবোর্ড, তোরণ দিয়ে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকেন। এসব পোস্টার, বিলবোর্ড, তোরণে মেয়রের ছবিও সংযুক্ত থাকে। তবে সিসিকের ছবি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার বিজ্ঞপ্তির পর এবার মেয়র ছবিসহ ঈদ শুভেচ্ছা জানাবেন কি না এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
তবে, সিসিকের জনসংযোগ দপ্তর বলছে, প্রতিবছরই রমজান মাসের আগে সিসিকের পক্ষ থেকে রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় এমন বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।
আলোচিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে- ‘এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকল নাগরিক ও বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠানের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে আসন্ন পবিত্র রমজান মাসের পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্যতা রক্ষায় সিলেট সিটি করপোরেশনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী বোর্ড, পোস্টার, ব্যানার, গাড়ির বডিসহ যে কোন বিজ্ঞাপন প্রচারে কোন ব্যক্তির ছবি ও কুরুচিপূর্ণ বিজ্ঞাপন প্রচার না করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিজ্ঞাপনী বোর্ড, পোস্টার, ব্যানার, কিংবা অন্যকোনভাবে এমন বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয় তাহলে তা অনতিবিলম্বে অপসারণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এমন বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে সিসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান বলেন, ‘আমরা মূলত রমজান মাসে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ছবিসহ বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণের জন্য এমন বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। তাছাড়া রমজানের ভাবমূর্তি রক্ষায় ছবিসহ ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ড না দেয়ার অনুরোধ করেছি। প্রতিবছরই রমজানের আগে সিসিকের পক্ষ থেকে এমন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘দেওয়াল লিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১২’ অনুযায়ী নগরে অনুমোদন ছাড়া পোস্টার ও ব্যানার টানানো এমনিতেই নিষিদ্ধ। আমরা নিয়মিতই অনুনোমোদিত ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করি।
এই আইনে ছবিসহ প্রচারে কোন নিষেধাজ্ঞা আছে কী না জানতে চাইলে মতিউর রহমান খান বলেন, ‘ছবিসহ প্রচার না করার বিষয়টি মূলত রমজানের পবিত্রতার কথা মাথায় রেখে অনুরোধ। এটা কেউ না মানলে আসলে আইন প্রয়োগের সুযোগ নেই।‘
এবছরই অনুষ্ঠিত হবে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের ছবিসহ ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে নগর। ধারণা করা হচ্ছে, ঈদের আগে এমন প্রচারের হার আরও বাড়বে। এছাড়া সিসিক মেয়র আরিফুল হকও প্রতিবছর ঈদের আগে বিলবোর্ড-তোরণের মাধ্যমে ছবিসহ ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকেন।
এবার মেয়র ছবিসহ তোরণ, পোস্টার, বিলবোর্ডের মাধ্যমে ঈদ শুভেচ্ছা জানালে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে প্রশ্ন করলে মতিউর রহমান খান বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি নিয়ন্ত্রণ করার। কতটুকু সম্ভব হবে তা তো আগে থেকে বলা যাবে না। তাছাড়া আমাদের অনুমোদন নিয়ে ও নির্ধারিত কর পরিশোধ করে সবাই প্রচার চালাতে পারবেন।’
এই বিজ্ঞপ্তির পর এবার ছবিসহ ঈদ শুভেচ্ছা জানাবেন কিনা তা জানতে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।