1. mdjoy.jnu@gmail.com : admin : Shah Zoy
  2. satvsunamgonj@gmail.com : Admin. :
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৫ অপরাহ্ন
  •                          

হাওরাঞ্চলের কথা ইপেপার

ব্রেকিং নিউজ
ফ্যাসিস্ট সরকার ভোট চুরি করে দীর্ঘ কয়েক বছর ক্ষমতায় ছিল : খন্দকার মুক্তাদির প্রবাসীরা আমাদের দেশের অমূল্য সম্পদ : এম এ মালিক নির্বাচন যত দেরী হবে দেশ তত পিছিয়ে যাবে- সিলেটে মির্জা ফখরুল প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করণে নির্বাচন কমিশনের দৃশ্যমান কর্মতৎপরতা চাই- জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার নাজির মধ্যনগর পুলিশের বিশেষ অভিযানে ওয়ারেন্ট ভোক্ত দুইজন আসামি গ্রেপ্তার মধ্যনগরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ভারতীয় কাপড়সহ একজন গ্রেপ্তার অস্ত্র-বিস্ফোরক ও সাইবার মামলার আসামী প্রতারক মামুনকে গ্রেফতারে মরিয়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সিলেটে গ্লোবাল টেলিভিশনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি পালিত আদালত অবমাননার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সিলেটে ভুয়া ওয়ারেন্টে গ্রেফতারকৃত ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক কাওছার জামিনে মুক্ত : তদন্ত কমিটি গঠিত

সিলেটে ভূয়া ওয়ারেন্ট দেখিয়ে ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি

Reporter Name
  • আপডেট করা হয়েছে শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:

ভুয়া ওয়ারেন্ট দেখিয়ে জালিয়াত চক্রের ফাঁদে পড়ে জেল কাটছেন ব্যবসায়ী সেলিম আহমদ কাউসার। তাকে ভুয়া ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করায় স্থানীয়দের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বাড়ছে সাধারন মানুষের মাঝে ক্ষোভ।

জানা যায়, গত ১৯ জুন দুপুরে সিলেট মহানগরীর কদমতলীস্থ নিজ দোকান থেকে র‌্যাব-৯ এর একটি অভিযানিক দল তাকে গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ থানায় সোর্পদ করে। তার বিরুদ্ধে নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার একটি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী হিসাবে কোন ধরনের পুলিশি রিকুইজিশন ছাড়াই র‌্যাব তাকে আটক করে। পরে ঐ ওয়ারেন্ট যাছাই বাছাই না করেই কাউসারকে জেলা হাজতে প্রেরণ করেন গোলাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ। বিনা অপরাধে ও বিনা দোষে স্থানীয় একটি জালিয়াত চক্রের ফাঁদে পড়ে তাকে গত ১২ দিন ধরে জেল কাটতে হচ্ছে। কাউসার আটকের পর বিষয়টির খোঁজ নিতে তার ভাই নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানায় গিয়ে খোঁজ খবর নেন। রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, কাউসার নামে কাউকে আটক করার কোন ওরারেন্ট থানা পাননি কিংবা রায়পুরা থানার মামলা নং-১৫, ধারা ৩০২/৩৪ দ.বি. এবং স্মারক নং-১৯৮/(৫/৩/ ২৫) এর ইজাহারভুক্ত কিংবা সন্দিগ্ধ আসামীও হিসাবে কাউকে আটক করার তথ্য নেই। কাউসারকে যে ভুয়া ওয়ারেন্টে র‌্যাব-৯ আটক করেছে তার কোন সত্যতা এখনও পাওয়া যায়নি। সেলিম আহমদ কাওছার কাউসারের ভাই নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে উক্ত মামলার সই মহুরী নকল উঠানোর জন্য ইতিমধ্যে আবেদন দাখিল করেছেন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর এই প্রথম কাউকে ভুয়া ওয়ারেন্টে আটক করা হয়েছে। এটা বর্তমান সরকারের জন্য লজ্জাজনক ও গর্হিত কাজ।

গোলাগঞ্জ উপজেলার আব্দুর রশিদ জানান, একজন আসামীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকলে সেটা আসামীর স্থায়ী ঠিকানার থানা পুলিশের কাছে আসবে। র‌্যাব-৯ কিভাবে এই ওয়ারেন্টের কপি পেয়ে কাউসারকে গ্রেফতার করল? থানা পুলিশ যদি র‌্যাবের কাছে রিকুইজিশন না দিয়ে থাকেন তাহলে র‌্যাব অতি উৎসাহী হয়ে কোন ধরনের যাছাই বাছাই ছাড়া নিরীহ ও নিরপরাধ একজন ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে? কাউসারের প্রতিপক্ষরা তাকে মিথ্যা ওয়ারেন্ট দিয়ে ফাঁসিয়েছেন। এই ঘটনার সুষ্টু তদন্তপূর্বক দ্রæততম সময়ের মধ্যে ব্যবসায়ী কাউসারকে মুক্তির দাবী করছি।

গোলাপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান,  নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার মামলা নং-১৫, ধারা ৩০২/৩৪ দ.বি. এবং স্মারক নং-১৯৮/(৫/৩/ ২৫) এর ওয়ারেন্ট মুলে র‌্যাব তাকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। আমরা তাকে আটক দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছি।

তবে র‌্যাব সেলিম আহমদ কাওছারকে গোলাপগঞ্জ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলেও মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা যাচাই-বাচাই না করে কিভাবে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে প্রশ্ন করা হলে ওসি কোন উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। সেলিম আহমদ কাওছার গোলাপগঞ্জ উপজেলার রণখেলি গ্রামের মৃত আওলাদ হোসেনের পুত্র।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার ১৫ বছর আগের একটি হত্যা মামলা (১৫(০৫)১০) দায়ের করেন নিলক্ষা দাড়িয়াগাঁওয়ের অফিজা খাতুন নামের এক মহিলা। মামলার প্রাথমিক অভিযোগ এবং পুলিশের দেওয়া চার্জশীটে আসামি হিসেবে ব্যবসায়ী সেলিম আহমদ কাওছারের নাম পাওয়া যায়নি। মামলাটি ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই নরসিংদী জেলার অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিজ্ঞ বিচারক শামীমা পারভিনের আদালতে নিষ্পত্তি করা হয়েছে।   মামলার এজাহারভুক্ত ৫৩জন আসামীর সকলেই খালাস পেয়েছেন। কাউকে সাজা দেয়া হয়নি।

রায়পুরা থানার মুন্সি দেলোয়ার হোসেন জানান, এই গ্রেফাতরি পরোয়ানাটি সম্পূর্ণ ভুয়া।

নরসিংদী আদালতের জিআর এবং রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আজিজুর রহমান জানান, এ গ্রেফতারি পরোয়ানা সম্পর্কে কিছুই জানি না। এই গ্রেফতারী পরোয়ানাটি সম্পুর্ন ভুয়া ও বানোয়াট।

সিলেট গোলাপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, র‌্যাব ভুল করতে পারে না এমনটাই ভেবে যাচাই-বাচাইয়ের প্রয়োজন মনে করিনি। তাছাড়া আমরা যাচাই-বাছাই না করলে কি হবে আদালতে তাকে পাঠানোর পর আদালত যাচাই-বাছাই করলো না কেন? গ্রেফতারি পরোয়ানা ভুয়া হলে তাকে কীভাবে কারাগারে পাঠানো হলো। পরিবারের প্রশ্ন র‌্যাব এই ওয়ারেন্ট কোথায় থেকে পেল এবং কোন সোর্সের মাধ্যমে পেয়ে অতি উৎসাহী হয়ে কাউসারকে গ্রেফতার করা হলো তা সকলের জানা দরকার। বিষয়টির সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

জেলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আবু তাহের জানান, সাধারণত অন্য জেলা থেকে কোন ওয়ারেন্ট আসলে সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় হয়ে থানায় যায় এবং যাচাই-বাচাই পূর্বক ওয়ারেন্ট সঠিক হলে আসামি গ্রেফতারের  বিধান রয়েছে। অথচ গোলাপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কোন প্রকার যাচাই-বাচাই না করে এমনকি পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা না করে অতি উৎসাহি হয়ে অথবা কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ব্যবসায়ী সেলিম আহমদ কাওসারকে আটক দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। এটার দায় র‌্যাব ও থানা পুলিশ এড়াতে পারে না। ভুয়া ওয়ারেন্ট সৃজন করে নির্দোশ মানুষকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানোর সাথে যে বা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য আদালতসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সেই সাথে ভুয়া ওয়ারেন্টে গ্রেফতারকৃত ব্যবসায়ী কাউসারকে দ্রæততম সময়ের মধ্যে সম্মানে  মুক্তির দাবী জানাচ্ছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন