স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ১নং ইসলামপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের গাঙপাড়- নোয়াকুট গ্রামে বিএডিসি’র সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ না থাকায় প্রায় এক হাজার একর ভুমিতে বোরো ফসল ফলাতে না পেরে চরম দু:শ্চিতায় দিনাতিপাত করছে শতাধিক কৃষক পরিবার। ঘটনাটি ঘটে ছাতক উপজেলার নোয়াকুট বিওপি ক্যাম্প এলাকায়।
জানা যায়, ২০১৭ সাল থেকে বিএডিসি’র অনুমোদন প্রাপ্ত ও লাইসেন্স প্রাপ্ত নোয়কুট সেচ প্রকল্পটির অধীনে প্রায় এক হাজার একর পতিত জমিতে পানি সেচের মাধ্যমে বোরো ফসল ফলিয়ে আসছেন এবং কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। গেল বছর স্থানীয় একটি আওয়ামী চক্রের মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছাতক উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও আওয়ামী দোসর মোস্তফা কামাল মুন্না কোন ধরনের তদন্ত ছাড়াই বিদ্যুৎ লাইন সংযোগের সুপারিশ করেন এবং বিএডিসি’ সুনামগঞ্জ এর সহকারী প্রকৌশলীর পত্রের ভিত্তিতে নোয়াকুট সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। বার বার স্থানীয় কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে পূণ:বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন নিবেদন করেও পূণ: সংযোগ পাচ্ছেন না। কিছু দিন পূর্বে নবাগত ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেচ পাম্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি নোয়াকুট সেচ পাম্পে বিদ্যুতের পূণ:সংযোগ দেয়ার সুপারিশ করলেও কোম্পানীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম ও আওয়ামী দোসর মৃনাল কান্তি চৌধুরী অগ্রাহ্য করে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে তালবাহানা শুরু করেন। উপায় না পেয়ে কৃষকরা পল্লী বিদ্যুতের জিএম মো: রবিউল হকের কাছে বিষয়টি অবগত করলে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দ্রæততম সময়ের মধ্যে পূণ:বিদ্যুৎ সংযোগের আশ্বাস দেন।
এ দিকে একই গ্রামের একজন আইনজীবী ও ছাতক উপজেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল আলম ও আফতারুজ্জামান এর নেতৃত্বে নিজস্ব আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ২ কিউসেক পাম্প বসানোর অনুমোদন লাভ করে এবং দীর্ঘ বছর ধরে পাম্প বসানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ায় পুরাতন সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে কৃষকদের আর্থিক ক্ষতি সাধন করিয়াছে। তবে এডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি কোন পাম্পের মালিক না। আফতারুজ্জামান আমার আত্মীয়। সে বৈধ কাগজপত্র দিয়ে বিএডিসি’র লাইসেন্স প্রাপ্ত হয়েছেন কিন্তু রফিক মিয়া গংরা আমাদের পাম্প বসাতে দিচ্ছে না। এমনকি বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ করতেও দিচ্ছে না। এ দিকে কৃষকের বীজ তলায়-ধানের ছারা পানির অভাবে বিনষ্ট হচ্ছে এবং অনেকের ধান লাগানো জমি শুকিয়ে ফেটে চৌচির হচ্ছে। কাঁদামাটি শক্ত হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, আমাদের বিদ্যুৎ সংযোগ না দিলে বোরো ফসল করতে পারব না এবং না খেয়ে আমাদের থাকতে হবে। আমাদের ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনাও করাতে পারব না। সরকার কৃষকদের কল্যানে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছেন আর কোম্পানীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতি কৃষকের মুখে লাথি মারছেন। আমরা ন্যায় বিচার চাই এবং দ্রæততম সময়ের মধ্যে বিদ্যুতের পূণ:সংযোগ চাই।
এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মৃনাল কান্তি চৌধুরী জানান, ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশের প্রেক্ষিতে রফিক মিয়ার সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক সুপারিশের ভিত্তিতে পূণ:সংযোগ দিতে হলে অবশ্যই লিখিতভাবে আমাদেরকে নির্দেশনা দিতে হবে। অন্যথায় সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ পূন: সংযোগ দেয়া যাবে না।
পল্লী বিদ্যুতের জিএম মো: রবিউল হক জানান, কৃষকদের চাহিদা পুরণে আমরা সর্বাত্তক চেষ্টা করছি। দ্রæততম সময়ের মধ্যেই নোয়াকুট সেচ পাম্পে পল্লী বিদ্যুতের লাইন পূন:সংযোগ দেয়া হবে।