স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটের ৫নং ওয়ার্ডের আম্বরখানা সাপ্লাই রোডের বাসিন্দা বীমা কর্মকর্তা ও সমাজসেবক মো. বদরুজ্জামানের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় বাসায় ভাঙচুর ও স্ত্রীকে শ্লিলতাহানীর চেষ্টা করা হয়েছে বলে বদরুজ্জামান জানান। পারিবারিক ও স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়, স্থানীয় এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর যন্ত্রনায় অতিষ্ট সমাজসেবক বদরুজ্জামান ও তার পরিবার। স্বাভাবিক জীবন যাপনে বাধাগ্রস্থ হচ্ছেন বলে তার অভিযোগ। গেল ৫ আগস্টের পর থেকে সারা দেশে যখন মানুষ তাদের পছন্দের নেতৃত্ব বাছাই করে নির্বাচিত করতে প্রস্তুত —সেই মুহুর্তে সিলেট সিটি করপোরেশনের ৫নং ওয়ার্ডের স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী তরুণ ও যুবকরা নির্বাচনে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে সমাজসেবক বদরুজ্জামানকে বাছাই করে নিজেরাই স্বপ্রনোদিত হয়ে তার নামে এলাকায় পোস্টার লাগানোর পাশাপাশি ব্যানার ফেস্টুন লাগান। এর বাইরেও মো.বদরুজ্জামানের জনপ্রিয়তার কারণে যুবকরা তাকে ওয়ার্ডবাসীর সেবক হিসেবে মনোনিত করে লিফলেট বিতরণও করতে থাকেন। এই প্রচারণা দেখেই স্থানীয় বিএনপির এক শীর্ষ ক্যাডার ও চাঁদাবাজ তাকেও এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে ঘোষনা করেন।
স্থানীয়রা জানান, এর আগেও এক সময় এই দুধর্ষ ক্যাডার এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চেয়েছিলো কিন্তু তাকে বিএনপি নির্বাচন করতে বাধা দেয়। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে তাকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।
স্থানীয়রা আরও জানান, এবার যখন সমাজসেবক বদরুজ্জামান স্থানীয় যুবকদের আগ্রহে নির্বাচনে অংশ নিতে সম্মতি জানান তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ও হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ওই ক্যাডার ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠেন। এলকাবাসীর মতে তার নাম মুখে আনতেও ভয় পায় সাধারণ মানুষ, নির্বাচনে অংশ নিলেও এই ক্যাডার জনপ্রীয় সমাজসেবক বদরুজ্জামানের কাছে হেরে যাবে সেটি প্রায় নিশ্চিত কারণ ওই ক্যাডারের বিরুদ্ধে বহু অপরাধমুলক কর্মকান্ডে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে বিএনপি কর্মীরা সর্বোচ্চ ক্ষমতা ভোগ করার সুবাদে এই ক্যাডারও হয়ে উঠে বেপরোয়া।
স্থানীয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাছে মৌখিক ও প্রাথমিক অভিযোগের সুত্র ধরে বীমা কর্মকর্তা ও সমাজ সেবক বদরুজ্জামান জানান — আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করার প্রস্তুতি ও প্রচারনা করায় ঈর্ষান্বিত হয়ে স্থানীয় ওই শীর্ষ সন্ত্রাসী ২৮ নভেম্বর ২০২৪ সকালে বদরুজ্জামান কে মুঠোফোনে কল করে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করেন। নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতেও হুমকি দেয় ওই ক্যাডার। এই পদে নির্বাচন করাকে ওই চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী মেনে নিতে না পারায় বদরুজ্জামান কে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এর পরেও সাহস নিয়ে বদরুজ্জামান তার এলাকার মানুষের জন্য নির্বাচনের প্রচারণা চালিয়ে যান কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ বিকাল ৪ ঘটিকায় ওই মাস্তান ও এলাকার ত্রাস বিএনপি নেতা তার দলবল ও গুন্ডা বাহিনী নিয়ে দেশীয় অস্ত্র— শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মহড়া দিয়ে সমাজসেবক বদরুজ্জামানের বাসায় হামলা চালায় বলে জানান তার পরিবার। এ সময় বাসায় ভাংচুরের পাশাপাশি বদরুজ্জামানকে প্রাণে মারার চেষ্টা করে হামলাকারীরা। এ সময় বদরুজ্জামান পালিয়ে বাঁচলেও তার স্ত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় বাসার লোকজন চিৎকার করলে এলাকাবাসীরা এগিয়ে আসায় হামলাকারীরা বের হয়ে যায় এবং বদরুজ্জামানকে খুন করার হুমকি দিয়ে যায় বলে জানান লোকজন।
এই ঘটনার পর থেকেই জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত সমাজ সেবক বদরুজ্জামান। তার বাসার সামনে দিয়ে নানা ধরনের অস্ত্র নিয়ে ঘুরাঘুরি করতে দেখা গেছে অনেককে, বিষয়টি স্থানীয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবগত করা হয়েছে বলে জানান বদরুজ্জামান।
এ বিষয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন “আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি, যে বা যারাই এই হুমকি প্রদান করছেন তা খতিয়ে দেখা হবে এবং আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।