সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: টানা বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার তিন ইউনিয়নে তৃতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের দুই হাজার হেক্টর আমন ধান।
বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে ও সড়কের উপর দিয়ে উপচে পড়ছে কুশিয়ারা নদীর পানি। উপজেলার আশারকান্দি, পাইলগাঁও, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বাজার সহ ৫০ গ্রামে কুশিয়ারা নদীর পানি প্রবেশ করছে।
এলাবাসী জানিয়েছেন টানা বৃষ্টিপাতে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলা নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। পূর্ব জালালপুর, নতুন কসবা ও বড় ফেছী বাজার সংলগ্ন জগন্নাথপুর—বেগমপুর সড়কের উপর দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। এদিকে রানীগঞ্জ, রৌয়াইল, পল্লীগঞ্জ ও বড় ফেছী বাজারের শতাধিক দোকান ঘরে নদীর পানি প্রবেশ করায় ব্যবসায়ি ও ক্রেতারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
পাইলগাঁও ইউনিয়নের পুরাতন আলাগদি ও খানপুর কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে ১০টি গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। জালালপুর ক্বাসিমুল উলুম মাদ্রাসায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও উপরোক্ত এলাকার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সহ জনসাধারণকে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বসতঘর সহ বাড়ির উঠানে ও আঙ্গিনায় পানি রয়েছে। তবে আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যার্ত কোন পরিবারকে আশ্রয় নিতে দেখা যায়নি। পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবুল হোসেন ও আলী আকবর খান বলেন, ফসল রক্ষার জন্য সোনাতলা ও খানপুরের ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে, ভাঙ্গা বাঁধ গুলো বাঁধা হলে এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবেনা।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে বৃষ্টিপাতে সুরমা নদীর পানি বাড়লেও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা ৮০ সেন্টিমিটারের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির সম্ভাবনা নেই।
তবে জগন্নাথপুর উপজেলায় কুশিয়ার পানি প্রবেশ করায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় বন্যা মোকাবেলা যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্রুত রাখার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।