ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের আমলে সিলেট বিভাগ জুড়ে পুলিশ প্রশাসনে কট্টর আওয়ামীপন্থি পুলিশ অফিসার হিসেবে পরিচিত ওসিদের এমন পুরস্কৃত পদায়ন-থানায় ওসি হিসাবে বদলি বিস্মিত হয়েছেন নির্যাতিতরা। বিগত ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের থানায় নিয়ে এসে অমানষিক নির্যাতন করা হতো। রাজনৈতিক মামলার ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। বিরোধীদের দমন-পীড়নে জড়িত ওসি-তদন্ত ওসিসহ দায়িত্বশীল অন্যান্যরা ওসি হিসাবে বহাল থেকেইে দায়িত্ব পালন করছেন। সুত্র জানিয়েছে, বর্তমানে একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদে রয়েছেন এমন
সহপাঠীদের ব্যবহার করে নিজেকে বঞ্চিত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে অনেকে এক্ষেত্রে সফলও হয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ মোঃ নুর আলম বিপি-৭৯০৬১০২৩৯০। তিনি সুনামগঞ্জ শাল্লা থানার ওসির দায়িত্বপালন কালীন সময়ে যুবলীগ নেতার নির্দেশে একই থানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই শাহ আলীকে হত্যার চেষ্টা করেন। হত্যার পরিকল্পনা যুবলীগ নেতা ও ওসির অডিও ফাঁস হবার পর বিগত ২০২১সালের ১২ আগষ্ট সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমেদ এক আদেশে তাকে ক্লোজড করেন। তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে হয়রানী, থানায় কর্মরত নারী কনস্টেবলকে কু-প্রস্তাব দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। হবিগঞ্জ ওসি ডিবি নন্দন কান্তি ধর, সাবেক ওসি হিসাবে তাহিরপুর থানায় দায়িত্ব পালন করেন। বিগত ২০১৫ সালে (৩১ অক্টোবর) ফেফুগঞ্জ থেকে ১০১টি ককটেল, ৩টি পাইপগানসহ দুই শিবিরকর্মীকে গ্রেফতারের কৃতিত্বের জন্য তাকে আইজিপি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ২০০১ সালে সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) পদে যোগদেন। বিগত ২০১১সালে ইন্সপেক্টর (ওসি) হিসাবে পদোন্নতি পান। ওসি মাধবপুর আব্দুল্লা আল মামুন সাবেক ওসি হিসাবে শাল্লা থানায় দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আওয়ামীলীগের পাতানো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া (হিরু আলম-এর নির্বাচনী এলাকায়) মূল দায়িত্ব পালন করেন। বাহুবল থানার বর্তমান ওসি (তদন্ত) গিয়াস উদ্দিন (ট্যুরিষ্ট পুলিশে বদলির আদেশ প্রাপ্ত), মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় সেকেন্ড অফিসার হিসাবে নির্বাচনকালীন সময়ে দায়িত্বপালন করেন। নবীগঞ্জ থানার ওসি কামাল হোসেন তার বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অনেক অভিযোগ উঠেছে। শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি দীলিপ কুমার নাথ, নির্বাচন কালীন সময়ে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করেন। বাহুবল থানার ওসি তদন্ত আলমঙ্গীর হোসেন- হবিগঞ্জ আরও/১, রিজার্ভ অফিস- এসআই ফরহাদ নির্বাচনকালীন সময়ে বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করেন। সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারা বাজার থানা ওসি মোঃ জাহিদুল হক, সাবেক কর্মস্থল দিরাই ও শান্তিগঞ্জ থানা। দিরাই থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক কর্মস্থল হবিগঞ্জ জেলার মাধরপুর থানা। তাহিরপুর থানা ও সুনামগঞ্জ থানার (২০০১-ব্যাচ)-একই ভাবে থানায় ওসি হিসাবে বহাল রয়েছেন। সিলেট : জকিগঞ্জ থানার ওসি মুন্না, পাতানো নির্বাচনী সময়ে ক্ষমতাধর ওসি (তদন্ত) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। জৈন্তাপুর থানার ওসি মোহাম্মদ বদরুজ্জামান- তিনি ২০১৭ সালের ৩০ জুন বিয়ানীবাজার ও বালাগঞ্চ থানায় ওসি তদন্ত। ১ জুলাই-২০১৭ থেকে ১১ অক্টোবর-২০১৮ইং পর্যন্ত বালাগঞ্জ থানার ওসি। এবং ১২ অক্টোবর-২০১৮ ফেঞ্চুগঞ্জ থানায়। গোলাপগঞ্জ থানার ওসি (ডিআইজির প্রিয় হিসাবে পরিচিত), সাজানো নির্বাচনে দায়িত্বপালন করেন। ফেঞ্চুগঞ্জ থানার বর্তমান ওসি নির্বাচনকালীন সময়ে বিভিন্ন থানায় ওসি হিসাবে দায়িত্বপালন করেন। মৌলভীবাজার জেলা : শ্রীমঙ্গল থানার ওসি মো: আমিনুল ইসলাম। এর আগে তিনি ২০২২সালের ১৩ নভেম্বর শ্রীমঙ্গল থানায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসাবে যোগদান করেন। নির্বাচনকালীন সময়ে কুলাউড়া থানায় তদন্ত ওসি হিসাবে দায়িত্বপালন করেন। রাজনগর থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ মুবাশ্বির নির্বাচনকালীন সময়ে বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করেন। কমলগঞ্জ থানার ওসি ইফতেখার আহমদ, সাবেক কর্মস্থল সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর থানায় নির্বাচনকালীন সময়ে থানায় দায়িত্ব পালন করেন। কুলাউড়া থানার ওসি (বদলীর আদেশ প্রাপ্ত), জুড়ী ও বড়লেখা থানার ওসিসহ সিলেট বিভাগ জুড়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ের ওসি এখনো বহাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অপরদিকে একটি সুত্র জানায়, সিলেট বর্তমান ডিআইজি মোঃ মুশফেকুর রহমান বিগত ০২/০৭/২০১৫ইং হইতে ১০/০৯/২০২৩ইং পর্যন্ত সিলেট মেট্রাপলিটন পুলিশ, উপ-পুলিশ কমিশানার (দক্ষিণ) গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।