সিলেট জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি গঠনের তিন বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। ২০২১ সালের এই দিনে কেন্দ্রীয় সভাপতি আল—নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদ এবং সিলেট থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া চার সদস্যের নাম ঘোষণা করেছিলেন।
ওইদিন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে মো. নাজমুল ইসলাম ও রাহেল সিরাজ সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন।
এছাড়া সদস্য হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পান জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খান, বিপ্লব কান্তি দাস, মুহিবুর রহমান মুহিব ও কনক পাল অরূপ।
এক বছরের জন্য দেওয়া কমিটি তিন বছর পার করলেও পূণাঙ্গ হয়নি। এ নিয়ে পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ ছিল। দীর্ঘদিনেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা দেখা দেয়।
সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার তিন বছর পূর্ণের আগের দিন শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম। তিন বছরে কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ার কারণ ব্যাখা করেন তিনি।
নাজমুল তার স্ট্যাটাসে কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ার জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি সিলেট আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাকেও দায়ি করেন। যদিও আওয়ামী লীগ নেতাদের না তিনি স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেননি।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি চার বার পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য জমা দিয়েছেন। কমিটি অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে চেষ্টা, তদবির, হাতে ধরা, পায়ে ধরা, মালিশ করা, মলম দেওয়া এমন কিছু বাদ রাখেননি, কিন্তু তাতে ব্যর্থ হন তিনি।
নাজমুল ইসলামের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো— ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ,সিলেট জেলা শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের আগামীকাল ০৩ বছর পূর্ণ করবো, এই দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে ব্যার্থতা আক্ষেপ একটাই তা হলো পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করতে না পারা, তবে আমি আমার বিবেকের কাছে সবসময় পরিস্কার, কেননা এই তিন বছরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সর্বমোট চার (০৪) বার পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দিয়েছি, চেষ্টা তদবির হাতে ধরা পায়ে ধরা মালিশ করা মলম দেয়া এমন কিছু বাদ রাখি নাই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য, দিনের পর দিন ঢাকা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন না করাতে পারার এই আক্ষেপ সবসময় থাকবে।
প্রশ্ন আসবে কেন অনুমোদন হয়নি, কারা বাধা দিলেন, সমস্যা কি ছিলো? উত্তর একটাই দলের এখন দুর্দিন, দুঃসময়ে এইসব বলে সংগঠনের অভ্যন্তরে আর বিভক্তি তৈরি করতে চাইনা, তবে মোটা দাগে যদি দায় দিতে হয় তবে অবশ্যই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি /সাধারণ সম্পাদককে দিতে হবে, তাদের খামখেয়ালি, তাদের অবহেলা, স্বেচ্ছাচারিতার আর জবাবদিহিতা না থাকার কারণে শুধু সিলেট জেলা ও মহানগর নয় বরং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রায় সকল সুপার ইউনিট একধরণের স্থবির হয়ে গিয়েছিলো, আর স্থানীয় পর্যায়ে এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট আওয়ামীলীগের সাথে আমাদের দূরত্ব ছিলো যেহেতু আমরা তাদের বলয়ের বাইরে ছিলাম এবং সেই কারণে সিলেটের আওয়ামীলীগের অনেকেই চাননি জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ পূর্ণাঙ্গ হোক, কেননা আমাদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়ে গেলে সফলদের কাতারে আমাদের নাম অগ্রভাগে চলে আসবে এটা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি বা মেনে নেয়া সম্ভব ছিলো না।’