বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় বিএনপির ৪২২ জন নিহত হয়েছেন। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসাবে, গণআকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে গণঅভ্যুত্থানে সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে নেমে আসে বিএনপি এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকদের অংশগ্রহণে গণঅভ্যুত্থানে সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখে ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে আমাদের লক্ষ্যে। এই আন্দোলনে পোশাক শ্রমিক কিংবা রিকশচালক, পাবলিক কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, বাম কিংবা ডান আদর্শের অনুসারী, সব মত ও পথের রাজনৈতিক কিংবা অরাজনৈতিক ব্যক্তি হতাহতের পরিচয় যাই হোক না কেনা দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করতে লড়েছেন মনে প্রাণে।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে রাজপথে পুরোটা সময় গুম-খুন, হামলা-মামলা, দমন-দুর্বৃত্তায়নের শিকার হয়েও জনগণের প্রতিবাদের প্রতিনিধি হিসাবে সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। তৃণমূলের স্পন্দন ও গণমানুষের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে অবিরাম জুলুম-অবিচারের মাঝেও বিএনপির নেতাকর্মীরা মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য অবিচল সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। সেই অভীষ্ট লক্ষ্যে, রাজনৈতিক নেতৃত্বের অবদানে গড়ে ওঠা দীর্ঘদিনের ঐক্যকে ধারণ করে গণতন্ত্রের পক্ষের সব শক্তির বলিষ্ঠ ভূমিকায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে।
তিনি আরোও বলেন, এ বিজয়ের পেছনে রয়েছে অসংখ্য নির্যাতিত মানুষের বেদনার অপ্রকাশিত ইতিহাস। গুম হওয়া ছেলের ফেরার প্রতীক্ষায় মা। স্বামী হারানো বেদনাবিধুর স্ত্রীর অনন্ত আর্তনাদ। পঙ্গু বাবার জন্য সন্তানের হৃদয়বিদারক হাহাকার। আর কারাগারে বন্দি ভাইয়ের জন্য বোনের নীরব প্রার্থনা। তাদের সবার ১৭ বছরের রক্ত, শ্রম ও অশ্রু দিয়ে, প্রতিটি পরিবারের ক্ষোভ, ক্রোধ ও অব্যক্ত বিস্ফোরণ বুকে ধারণ করে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চলমান ছিল। দেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীর অবিচল সংগ্রাম ও অবদানের প্রতিফলন।
তিনি রবিবার (২৭ অক্টোবার) দক্ষিণ সুরমার ২৫নং ওয়ার্ড বিএনপির অর্ন্তগত খোজারখলা পাড়া কমিটির উদ্যোগে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহতদের সম্মাননা প্রদানকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব, মহানগর বিএনপির সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন আহমদ মাসুক, মোর্শেদ আহমদ মুকুল, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান।
অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহত মোয়াজ জোহানী, আল শাহিদ, সিরাজ উদ্দিন লালা, নাঈম ইসলাম রাহি, ফাহিম আহমদ হৃদয়, আম্বর আলী, মোহাম্মদ ইসমাঈল, ইউসুফার রহমান, আসিফ আহমদ, মাহিয়া বেগমকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
২৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি জাবেদুর রহমান দিদারের সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য আবুল কালাম এবং মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আজহার আলী অনিকের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবদলের সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মামুনুর রশিদ মারুফ, ২৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপাতি মোতাহির আলী মাখন হাসান, রেজাউর রহমান রুজন, মেহরাজ হোসেন রাজু, তাজুল ইসলাম, রফিক আহমদ, হারুন চিশতী, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালাম লস্কর মুনিম, মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল ইসলাম, ২৫নং ওয়ার্ড বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা মো. নজমুল ইসলাম, মোস্তাক আহমদ, রানা আহমদ, ফাহিম আহমদ প্রমুখ। শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন হাফিজ মাওলানা মোয়াজ জোহানী ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন হাসান আহমদ।