নিউজ ডেস্ক :: সিলেট নগরের প্রধান সমস্যা হয়ে উঠেছে জলাবদ্ধতা। বষ্টি হলেই জলমগ্ন হয়ে পড়ছে নগরী। পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে নগরের বেশিরভাগ এলাকা। বুধ ও বৃহস্পতিবার বৃষ্টিতেও আবার জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ পোহাতে হল নগরবাসীকে।
অথচ নগরের জলাবদ্ধতা নিসরনে এ পর্যন্ত প্রায় হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে সিটি করপোরেশন। তবু জলাবদ্ধতা থেকে নিস্তার মিলছে না। বিশেষত গত বছর বন্যার পর থেকে বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যাচ্ছে নগর। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ এরকম অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ঢুকে যাচ্ছে পানি। ফলে জলবাদ্ধতা নিরসনের বিভিন্ন প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচিত হওয়ার পর ওই বছরই জলাবদ্ধতা নিরসনে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। এরপর ২০১৪ সালে ৭৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা ও ২০১৫ সালে আরও ১১ কোটি টাকা বরাদ্ধ আসে। আর ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারি বরাদ্দে ২৩৬ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়।
সূত্রটি আরও জানায়, ২০১৯ সালে ‘সিলেট সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পে বরাদ্দ আসে ১ হাজার ২২৮ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যয় করা হয় ২৬৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এ ছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৯৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৯৮ কোটি ৪৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়। প্রকল্পটির আওতায় অন্যান্য কাজের সঙ্গে ৩২৭ কিলোমিটার ড্রেন ও ৮ কিলোমিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়।
এত বিপুল ব্যয় সত্ত্বেও জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ প্রসঙ্গে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘বেশি পরিমাণ বৃষ্টির কারণে ড্রেন দিয়ে পানি নামতে সময় লাগছে। সিটি করপোরেশনের টিম কাজ করছে। কোথাও ময়লা-আবর্জনার জন্য পানি আটকে গেলে তা পরিষ্কার করে দেয়া হচ্ছে, তবে বৃষ্টি থামলেই পানি নেমে যাবে।’
নগরে অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে জলাবদ্ধতা নিরসন হচ্ছে না দাবি করে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘অপরিকল্পিত উন্নয়ন হওয়ায় নগরবাসী এসব কাজের কোনো সুফল পাচ্ছে না; বরং টাকার অপচয় হয়েছে।’
বৃষ্টিতে গত দুদিন জলাবদ্ধতা দেখা দিলেও নগরে দেখা যায়নি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। আরিফুল হক ঢাকায় আছেন বলেন জানা গেছে।
আরিফুল হক চৌধুরী বলেন- ‘আমি মঙ্গলবার রাতে দলীয় কাজে ঢাকায় এসেছি। সিলেটে থাকলে অবশ্যই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া এবং মারামারি হওয়া এলাকায় যেতাম।’
অপরিকল্পিত উন্নয়নের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা প্রকল্প গ্রহণের পর সরকারের বিভিন্ন তা পাস করে। ফলে অপরিকল্পিত হলে মন্ত্রণালয় থেকে তা পাস হওয়ার কথা না। তাছাড়া সর্বশেষ ১২শ’ কোটি টাকার প্রকল্পে সব টাকা এখনো পাইনি। ৫০০ কোটি টাকার মতো পেয়েছি।