বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত শিশু শফিকের পাশে দাঁড়িয়েছে নাগরিক
আলেমসমাজ। রোববার (২৫ আগস্ট) তার শারিরীক অবস্থা ও চিকিৎসার খেঁাজখবর নিতে সিলেট
সদর উপজেলার টিলারগাঁওয়ে অবস্থিত শিশুটির বাসায় যান সংগঠনের সমন্বয়করা।
শফিক সেখানে তার মায়ের সঙ্গে বসবাস করে। শফিকের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনাটি সারাদেশে খুব
আলোচিত হয়েছিলো। প্রথমে সে মারা যাওয়ার খবর প্রচার হলেও অল্পের জন্য তার জীবন রক্ষা পায়।
শফিক জানায়, ২ আগস্ট (শুক্রবার) সিলেট ওসমানী মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
মাকে দেখে সে তার বাসায় (টিলাগাঁওয়ে) ফিরছিলো।
ওইদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সারাদেশে পালিত হচ্ছিলো ‘প্রার্থনা ও গণমিছিল’। কর্মসূচি প্রতিহত করতে
পুলিশ ছিলো মারমুখী। আন্দোলকারীদের ইটপাটকেলের জবাবে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি
ছঁুড়ছিলো।
এই অবস্থায় আখালিয়ায় পেঁৗছার পর শিশু শফিক পুলিশের গুলির মুখে পড়ে যায়। তার
হাত, বুক ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গুলিবিদ্ধ হয়ে
রাস্তায় পড়ে গেলে তাকে উদ্ধারে আন্দোলনকারীরা এগিয়ে আসতে চাইলে পুলিশ তখনও গুলি
ছঁুড়তে থাকে। পরে পুলিশের এক সদস্য তাকে উদ্ধার করে পাশ^বর্তী বেসরকারি হাসপাতালে
ভর্তি করেন। সেখানে তিনদিন চিকিৎসার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
এখনও তার শরীরে গুলি রয়ে গেছে।
নাগরিক আলেমসমাজের সমন্বয়কদের সাথে আলাপকালে শিশু শফিকের মা আরফিনা বেগম জানান,
সন্তানের দু’মাস বয়েসে স্বামী আমির আলীর সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তখন দুধের
শিশুকে নিয়ে পিতার বাড়িতে উঠেন। অভাবের সংসারে শফিকে লেখাপড়া করাতে পারেনি। এই
অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হওয়া সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন বোধ করছেন। শিশুটির চিকিৎসা
চালিয়ে নিতে তার মায়ের হাতে নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দিয়ে দ্রুত তাকে হাসপাতালে
ভর্তির পরামর্শ দেন নাগরিক আলেমসমাজের সমন্বয়করা।
শিশু শফিকে দেখতে যান নাগরিক আলেমসমাজের প্রধান সমন্বয়ক সাংবাদিক নোমান বিন
আরমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক কিশোয়ার মোশাররফ, সাংবাদিক নূর
আহমদ, মিশন ওয়ান মিলিয়নের প্রধান নির্বাহী ফায়যুর রাহমান ও সমন্বয়ক হক নাওয়াজ।
নাগরিক আলেমসমাজ এক বিবৃতিতে জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে র্যাব—পুলিশ,
বিজিবি ও আওয়ামী লীগ—ছাত্রলীগসহ পতিত স্বৈরশাসকের সহযোগীদের হামলায় আহত—নিহত
নিরপরাধ ছাত্রজনতা ও আলেমদের পাশে থাকার মানবিক উদ্যোগসহ চলমান থাকবে। ঢাকায় গুলিবিদ্ধ
হয়ে আহত মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের রক্তা গ্রামের হাফিজ মাওলানা
সালেহ আহমদের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে কর্মসূচি সূচনা করে নাগরিক আলেমসমাজ।