ডেস্ক রিপোর্ট : কক্সবাজারে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফ উদ্দিন খুনের ঘটনায় অবশেষে মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা অবসরপ্রাপ্ত আনসার কমান্ডার আবুল বশর বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রাতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
এ ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার আশরাফুল ইসলামকে বুধবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় দিকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আসাদ উদ্দিন মো. আসিফের আদালতে তোলা হয়। সেখানেই আশরাফ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার আশরাফুল ইসলাম কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী ইসলামপুর এলাকার মো. হাশেম প্রকাশ কাশেম মাঝির ছেলে ও স্থানীয় একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী।
এদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গ্রেফতার আশরাফুলের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, মোবাইলে ধারণ করা একটি ‘অনৈতিক কর্মের ভিডিও’ দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করায় হোটেল কক্ষে সাইফ উদ্দিনকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে হত্যা করে পালিয়ে যায় আশরাফুল।
পুলিশের সংবাদ সম্মেলনের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তাতে দ্বিমত পোষণ করেছেন নিহত সাইফ উদ্দিনের পরিবার। তারা পুলিশ সুপারের বক্তব্যকে ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও প্রশ্নবোধক’ বলে মন্তব্য করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সাইফ উদ্দিনের ছোট ভাই মহিউদ্দিন মহিম বলেন, গ্রেফতার আশরাফুল ইসলামের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সঙ্গে আমি এবং আমার পরিবার একমত নই। আমরা এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি। একইসঙ্গে খুনের যথাযথ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত করে প্রকৃত কারণ উদঘাটনে পুলিশ প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।
মাহিম বলেন, একজন খুনির বক্তব্য কোনো ক্রস চেক না করে উপস্থাপন করা কতটা আইনসম্মত বা যৌক্তিক সেটিও প্রশ্ন। এটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও প্রশ্নবোধক। আশরাফুলের একার পক্ষে আমার ভাইকে খুন করার যে দাবি সেটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। কোনো ব্যক্তি কিংবা বিশেষ মহল আশরাফুলকে দিয়ে পরিকল্পনা মাফিক খুনের ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেষ্টা করছে। এটি আমার নিষ্পাপ ভাইয়ের চরিত্র হননের অপচেষ্টা বলে মনে করি। ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা বিশ্লেষণ করে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, হত্যাকাণ্ডটি অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং গ্রেফতার হওয়া আসামি নিঃসন্দেহে পেশাদার খুনি।
নিহতের ভাই আরও বলেন, সাইফ উদ্দিনকে চেতনানাশক কিছু দ্রব্য খাওয়ানোর পর অবচেতন করে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। আশরাফুল মাদরাসার ছাত্র এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গি সদস্য বলে আমরা মনে করছি। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলনের পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে কক্সবাজার সদর-রামু-ঈদগাঁও আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপারের বক্তব্য আমাকে মর্মাহত করেছে। উপস্থাপিত বক্তব্যটি বস্তুনিষ্ঠ নয়, এখানে খুনির সাজানো কথা উপস্থাপন হয়েছে মাত্র।