হাওরাঞ্চল ডেস্ক: খুনিদের পুনর্বাসনের চেষ্টা ও প্রতিবিপ্লবকে নস্যাৎ করতে ষড়যন্ত্র চলছে এমন শঙ্কায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১৫ আগস্ট রাজপথে থাকাসহ বেশকিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারাদেশে মুসলমানদের রোজা রাখা আর অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাসিনা ও তার সহযোগীদের আসামি করে মামলা করার মাধ্যমে বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে। একই দাবিতে ১৫ আগস্ট রাজপথে নামবেন তারা। পাশাপাশি তারা বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে উপদেষ্টাদের সচেতন হওয়ার সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন। গণমাধ্যমকে জনগণের কাতারে থেকে সংবাদ প্রচারের আহ্বানও জানান তারা।
সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ‘খুনি শেখ হাসিনার বিচার দাবি ও ক্যাম্পাসে দখলদারিত্বের রাজনীতি বন্ধের’ দাবিতে সমাবেশ হয়।
এ সময় খুনিদের পুনর্বাসন করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ উপদেষ্টাদের বক্তব্যের সমালোচনা করেন এবং তিন দফা দাবি জানান।
হাসনাত বলেন, উপদেষ্টা খুনিদের পুনর্বাসনের বক্তব্য দিতে দেখেছি। আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, ছাত্র—জনতার অভ্যুত্থানে আপনারা উপদেষ্টা হয়েছেন। সুতরাং যখন কোনো বক্তব্য দেবেন আপনার সামনে যেন ৫ আগস্টের গণভবনের চিত্র মাথায় থাকে, পার্লামেন্টের চিত্র মাথায় থাকে।
উপদেষ্টাদের গদি ছাড়া করারও হুঁশিয়ারি দিয়ে হাসনাত বলেন, যারা স্বৈরাচারকে পুনর্বাসন করতে চায়, যারা খুনি হাসিনাকে পুনর্বাসনের মত বক্তব্য দিতে চায়—আমরা ছাত্র—জনতা যেভাবে তাদেরকে উপদেষ্টা বানিয়েছি একইভাবে গদি থেকে নামাতে আমরা দ্বিধা করব না।
‘যারা খুনিদের পুনর্বাসনের জন্য ব্যাকস্টেজে ম্যাকানিজম করছেন আপনাদের বিষদাঁত ভেঙ্গে দেব। বক্তব্য দানের সময় সচেতন করে দিতে চাই উপদেষ্টাদের। না হলে আপনাদের ছাত্রজনতা প্রতিহত করবে। খুনিদের পুনর্বাসনের কোনো ধরনের চিন্তা করবেন না’, যোগ করেন হাসনাত।
গণমাধ্যমকে সতর্ক হওয়ার কথা জানিয়ে এ সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘কিছু গণমাধ্যম ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। আমরা আপনাদের আহ্বান করি আপনারা জনগণের কাতারে নেমে আসুন।’
হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাই, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে খুনি হাসিনাকে প্রধান আসামি করে তার সহযোগীদের আসামি করে মামলা করতে হবে। রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি, আহতরা কাতরাচ্ছে। আপনাদের স্পর্ধা হয় কীভাবে জনগণকে অস্বীকার করে খুনিদের পুনর্বাসন করার।’
ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম ছিল; সেই দখলদারিত্বের রাজনীতির পুনর্বাসন করতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি করেন তিনি।
সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘পাঁচ আগস্ট দেশ থেকে স্বৈরাচার তাড়ানোর পর ছয় আগস্ট থেকে কিছু কুচক্রী মহল ক্যু করার চেষ্টা করছিল। আমরা ছাত্র—জনতা তা দমন করি, এরপর সর্বশেষ বিচার বিভাগীয় ক্যু করার চেষ্টা করলে আপনাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে তা রুখে দিতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের বিপ্লবকে নস্যাৎ করতে এখনও একটি মহল ক্যু করার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা ছাত্র জনতা তাদের পরিকল্পনা সফল হতে দেব না।’
ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা সর্বশক্তি দিয়ে হাসিনার সব ষড়যন্ত্রকে রুখে দেব। আওয়ামী লীগ পরাজিত শক্তি, নানান কূটকৌশল আঁকছে, আমরা ছাত্র—জনতা কোনোভাবে ১৫ আগস্টের ক্যু করার পরিকল্পনা সফল হতে দেব না।