স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ছোট বড় ৯টি বিল ও ডোবা বিক্রি করে নগদ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠছে স্থানীয় নারকিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমির আলীর বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন গোবিন্দপুর মদনপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারন সম্পাদক রফিক মিয়া।
অভিযোগ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠইর মৌজাস্থিত মদনপুর গ্রামের পূর্বদিকে সরকারী খাস খতিয়ানভূক্ত ছোট বড় ৯টি বিল ও ডোবা যথাক্রমে গজারিয়া বিল, গরু রাখা বিল, পিচলা বিল, রওয়া বিল, চিনার ডুবি, বাংলাধরা ও উররাবিল বিক্রি করে মোটা অংকের অথ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। নারকিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমির উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র সরকারী খাস খতিয়ানভুক্ত ইজারাবিহীন ছোট বড় ৯টি বিল ও ডোবা জোরপূর্বক দখল করে দীর্ঘদিন ধরে দেশীয় প্রজাতির মাছ নিধন করে আসছে। এছাড়াও পাওয়ার পাম্পের সাহায্যে পুরো বিল শুকিয়ে মৎস্য আহরনের পায়তারা করছে চক্রটি। ফলে একদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব অপরদিকে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের মাছ। সরকারের রাজস্ব ও দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় জেলা প্রশাসকের দ্বারস্থ হন গোবিন্দপুর-মদনপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্যরা।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন যে, বিলগুলো থেকে সরকারী রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে খাস কালেকশন অথবা সরকারের নির্দেশে কোন কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রনে রাখার দাবী জানানো হয়। মদনপুর গ্রামের আমির উদ্দিন স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যাবহার করে দেশীয় অস্ত্রধারী বাহিনী নিয়ে জোরপূর্বক সরকারি ৯টি বিল ও ডোবায় কাটা, বাঁশ, নৌকা ও পাহাড়াদার দিয়ে তা নিজ দখলে রেখে দরিদ্র মৎস্যজীবীদের বঞ্চিত করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। ৮ লক্ষ ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে অন্য একটি চক্রের কাছে বিক্রি করে দেন আমির আলী গংরা। সরকারী খাস খতিয়ানের বিল ও ডোবা ওই তথাকথিত শিক্ষক আমির উদ্দিন কিভাবে নগদ অর্থে বিক্রী করেন এ নিয়ে সাধারন মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। এ নিয়ে যে কোন সময় স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্রের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ৯টি বিলও ডোবা সরকারের নিয়ন্ত্রনে আনার দাবী এলাকাবাসীর।
আরও জানা যায়, এই প্রভাবশালী চক্রের মূলহোতা শিক্ষক আমির উদ্দিন ও মদনপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি সেজুল মিয়া ও সাধারন সম্পাদক আব্দুন নূর গংদের বিরুদ্ধে রফিক মিয়ার ইজারা প্রাপ্ত জলমহালের প্রায় ৪/৫ লক্ষাধিক টাকার মৎস্য লুটের অভিযোগ রয়েছে। সরকারী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পাওয়ার পাম্প লাগিয়ে বিল শুকিয়ে মাছ নিধন করার চেষ্টা করছে তারা। এ বিষয়ে তিনি তাৎক্ষনিক ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে ফোন দিলে সরজমিনে উপস্থিত হলে ঘটনার সত্যতা পান ওই ভূমি কর্মকর্তা। এ সময় ভুমি কর্মকর্তা তাদেরকে মাছ ধরতে বাধা নিষেধ করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক আমির আলী জানান, আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। বিল ও ডোবার বিষয়ে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা অতীশ দর্শী চাকমা জানান, অভিযোগ পেয়ে সাথে সাথে একজন ভুমি কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। সরকারী খাস জমি অন্য কোন ব্যক্তি বা গোষ্টি নগদ টাকায় বিক্রি করার সুযোগ নাই। আর কেউ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রমানাদি পাওয়া গেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।