স্টাফ রিপোর্টার: ছাত্র—জনতার আন্দোলনে ১৪ জুলাই রাত থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত স্লোগান—মিছিল, গুলি—সংঘর্ষ ও প্রাণহানিতে সিলেট ছিলো এক চরম আতঙ্কের নগর। অনেকেই এ সময়কে একাত্তর সালের সঙ্গে তুলনা করছেন।
এ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সিলেট জেলায় ঝরেছে ১০টি তাজা প্রাণ। মহানগরে ৩ জন এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ৭ জন। নিহতের সংখ্যা জানা গেলেও আহতের প্রকৃত সংখ্যা এখনো জানা যায়নি। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে— আহত অন্তত দুই হাজার। এর মধ্যে আছেন ছাত্র, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে অন্তত আড়াই শ জনের অবস্থা গুরুতর ছিলো। এখন পর্যন্ত ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ছাত্র আন্দোলনেরসিলেটের সমন্বয়করা বুধবার (১৪ আগস্ট) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কলে বলেছেন— আহতদের তালিকা তারা প্রস্তুত করছেন।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেলের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৭ জুলাই থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ২৩৪ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। আর বুধবার (১৪ আগস্ট) পর্যন্ত ৪৮ জন শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি ও আঘাতের চিহ্ন নিয়ে ভর্তি আছেন।
এর মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৩ জন আছেন আইসিইউতে। ৮ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, সিলেটে সাম্প্রতিক সহিংসতায় মোট ১০ জন নিহতের মধ্যে ১ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের মধ্যে মাত্র ২ জনের ময়না তদন্ত হয়েছে। তারা হলেন— শাবি শিক্ষার্থী রুদ্র সেন এবং সিলেটের স্থানীয় দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার সাংবাদিক এ টি এম তুরাব। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেসি সহযোগিতা না পাওয়ায় বাকি ৮ জনের ময়না তদন্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন ওসমানী হাসপাতালের উপ—পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্ত্তী।
তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই রোগীদের চিকিৎসার্থে সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছি। সব চিকিৎসকরা রোগীদের সেবাদানে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানে ভর্তি হওয়া প্রতিটি রোগীর জন্য অধ্যাপক দ্বারা গঠিত মেডিকেল বোর্ড তাদের চিকিৎসার যাবতীয় সেবা নিশ্চিত করছেন।
চিকিৎসার যাবতীয় সেবা ফ্রি পাচ্ছেন রোগীরা। এ ছাড়া একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে রোগীদের সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পরিচালকসহ সবাইকে অবহিত করা হচ্ছে। পরিচালকসহ আমরা সবাই প্রতিদিন তিন বেলা রোগীদের ভিজিট করি। সার্বিকভাবে আমরা সর্বোত্তম সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ—সমন্বয়ক ও সিলেটের প্রধান সমন্বয়ক শাবিছাত্র আসাদুল্লাহ আল—গালিব বলেন— সিলেটে আন্দোলন চলাকালে আহত হওয়ার সবার তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। পরে সেটি যাচাই—বাছাই করে প্রকাশ করা হবে। এখন পর্যন্ত আহত যারা আমাদের সহযোগিতা চেয়েছেন আমরা সহযোগিতা করেছি। এছাড়া সরকারের নির্দেশে সিলেটের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন সকল আহতের তালিকা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে যাবে। আহতদের সহযোগিতা করছে সরকার।