ডেস্ক নিউজ:: দুই ছাত্রকে নির্যাতনের পর হলছাড়া করার একদিনের মাথায় এবার দলীয় এক কর্মীকে রুমে ডেকে নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতার বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বিকেল তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে।
এতে ভুক্তভোগী নুর মো. বায়েজীদ তার গ্রুপের নেতা ও ইংরেজী বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোজাহিদুল ইসলাম রিশাদের বিরুদ্ধে হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর শুক্রবার রাতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মারধরের শিকার ওই ছাত্র সিলেট এমএজি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
বায়েজীদ গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের অধ্যয়নরত এবং ওই হলের ৪০১২ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্রে হতে জানা যায়, গত শুক্রবার জুমআ নামাযের পর বায়েজীদকে নিজের কক্ষে (৫০১৬ নম্বর) ডেকে নেন রিশাদ। সেখানে বায়েজীদকে গালাগালি, মারধর ও মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি।
বায়েজীদের অভিযোগ, গ্রুপের নেতা রিশাদকে না জানিয়ে গ্রুপের অন্য সহপাঠীদের নিয়ে পৃথক মিটিং করায় তাকে মারধর করে। এ ঘটনায় প্রাণনাশের হুমকির ভয়ে নিরাপত্তার জন্য হল প্রাধ্যক্ষের কাছে আবেদন করেছেন তিনি।
রিশাদ বলেন, বায়েজীদ তার খুব কাছের ছোটভাই। দলীয় নির্দেশনা না মেনে সে গ্রুপে মাঝেমধেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এতে বায়েজীদকে রুমে ডেকে নিয়ে শাসিয়েছেন। মারধর করেননি।
বায়েজীদকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে রিশাদ বলেন, ‘রাগের মাথায় তো কত কথায় চলে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ কি কাউকে মেরে ফেলতে পারে।’
বায়েজীদ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন জানালে রিশাদ বলেন, ‘এটা বানোয়াট। আমার রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরও সে ভালো ছিল। হঠাৎ করে অসুস্থতার ভান করে হাসপাতালে গেছে। এ ব্যাপারে তৃতীয় পক্ষ কেউ তাকে ইন্ধন দিচ্ছে, আমাকে বেকায়দায় ফেলানোর জন্য।
ঘটনার বিষয়ে এ গ্রুপের অন্য নেতা সুমন মিয়া গণমাধ্যমে বলেন, ‘আসলে যে ঘটনা ঘটেছে সিনিয়র হিসেবে বায়েজীদের সঙ্গে এরকম আচরণ করা রিশাদের উচিত হয়নি। আমরা গ্রুপের সবাই বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।’
এদিকে প্রক্টরিয়াল বডির এক সদস্য জানান, বায়েজীদকে হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে গিয়ে গ্রুপ নেতা রিশাদ লোক প্রশাসনের মারুফ নামের এক ছাত্রকে গলাচিপে ধরেন। এ ঘটনায় বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় রাতেই প্রক্টরিয়াল বডি হল প্রাধ্যক্ষের অনুরোধে বঙ্গবন্ধু হলে রিশাদের কক্ষসহ কয়েকটি কক্ষে অভিযান চালায়। সেখানে কোনো ধরনের অস্ত্র-সস্ত্র পাননি তারা। তবে রিশাদের কক্ষ থেকে কয়েকটি মদের খালি বোতল উদ্ধার করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রক্টরিয়াল বডির ওই সদস্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় বিভিন্ন গ্রপিংয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে একটি গ্রুপের নেতা ছিলেন আশরাফ কামাল আরিফ। তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যাওয়াতে তার চারজন অনুসারীকে ওই গ্রুপের দায়িত্ব দিয়ে যান। এর একজন হচ্ছেন মোজাহিদুল ইসলাম রিশাদ। তিনি ছাত্রলীগের পদধারী কোনো নেতা ছিলেন না। সংগঠনটির কর্মী হিসেবে রয়েছেন
এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চেষ্টা করেও হল প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বুধবার ছাত্রসংগঠনটির অন্য গ্রুপের নেতা আজিজুল ইসলাম সীমান্তের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রকে নির্যাতন করে হলছাড়া করার অভিযোগ উঠে।