নিউজ ডেস্ক :: দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী লোভাছড়া পাথর কোয়ারির দু’তীরে জব্দকৃত প্রায় কোটি ঘনফুট পাথর নিয়ে অনিশ্চয়তার অবসান হতে যাচ্ছে। জব্দকৃত পাথরের মাপযোগের কাজ শুরু হয়েছে।
রোববার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্দেশনা মো.তাবেক এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)র ২ মার্চের অফিস আদেশের প্রেক্ষিতে লোভাছড়া পাথর কোয়ারিতে জব্দকৃত প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথর হতে (রিট মামলার আওতা বহির্ভূত) পাথরের পরিমাণ ও গুনাগুণ বিবেচনায় নিলামের ভিত্তি মূল্য নির্ধারনের জন্য প্রতিনিধি দল কাজ শুরু করেন।
রোববার দুপুরে প্রতিনিধি দলের আহ্বায়ক খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)র পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো.. আবুল বাসার সিদ্দিক আকন ও সদস্য সচিব খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)’র উপপরিচালক (খনি ও খনিজ) (চলতি দায়িত্ব) মো. মাহফুজুর রহমান এর নেতৃত্বে ৮ সদস্যের কমিটি প্রথম দিনে কোয়ারি এলাকা পরিদর্শন করে জব্দকৃত পাথরের স্তুপগুলো ঘুরে ঘুরে দেখন এবং পরিমাপের কাজও প্রত্যক্ষ করেন। প্রতিনিধি দল ৫ এপ্রিল পর্যন্ত কোয়ারি এলাকায় অবস্থান করে জব্দকৃত পাথরের পরিমাপ কাজের তদারকি করবেন বলে জানা গেছে।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. তৌছিফ আহমেদ, কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন্ত ব্যানার্জি, বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি)র উপ-পরিরচালক (ভূতত্ত্ব) মো. আশরাফ হোসেন, কানাইঘাট সার্কেলের এসএসপি মো. আব্দুল করিম, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের এর একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি, পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর।
প্রতিনিধি দল রিট মামলার আওতা বহির্ভূত পাথরের পরিমাণ ও গুনাগুণ বিবেচনায় নিলামের ভিত্তি মূল্য নির্ধারণপূর্বক আগামী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে বিএমডিতে প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৪ বছর পূর্বে লোভাছড়া পাথর কোয়ারির ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কোয়ারির দু’তীরে অবস্থিত প্রায় ১ কোটি ঘনফুট পাথর জব্দ করে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর। পাথর ব্যবসায়ীরা জব্দকৃত পাথরগুলো নিজেদের উত্তোলনকৃত পাথর বলে হাইকোর্ট ব্রেঞ্চ সহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দাখিল করলেও কোন সুরাহা হয়নি।
পাথর জব্দ করার পর পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট তিন দফা নিলামে পাথর বিক্রির দরপত্র আহ্বান করলে এ নিয়ে হাইকোর্টে নিলামকারী একজনসহ কয়েকজন পাথর ব্যবসায়ী বিভিন্ন অভাব অভিযোগ তুলে রিট মামলা করেন। যার কারনে প্রায় ৪ বছর ধরে লোভাছড়া পাথর কোয়ারিতে পড়ে থাকা এক কোটি ঘনফুট পাথরের নিলাম প্রক্রিয়া বিলম্বিত হলে জব্দকৃত পাথরের দেখাশোনার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
দীর্ঘদিন পর জব্দকৃত এ পাথরগুলো সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে পরিমাপ ও গুনাগুণ বিবেচনা করে নিলামের মূল্য নির্ধারনের কাজ শুরু হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত শতশত পাথর ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে কোয়ারিতে কাজের সাথে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিকদের মধ্যে আশার আলো দেখা দিয়েছে। পাথর ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন অন্তত নিলামের মাধ্যমে জব্দকৃত পাথরগুলো বিক্রি হলে তারা কিছুটা হলেও ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন এবং দ্রুত পাথর নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য সরকারের সর্বোচ্চ মহলে সহযোগিতা কামনা করেন তারা।