আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই প্রাথমিকের শূন্যপদে আট হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। দেশের আট বিভাগে তিন ধাপে নেয়া হবে এই নিয়োগ পরীক্ষা। চলতি আগস্ট মাসের শেষ দিকে নিয়োগ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করার দুই মাসের মধ্যেই পরীক্ষা আয়োজনের চিন্তা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেশের ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা চলতি বছরেই আয়োজন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করা হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে, সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ঠিক করতে শিগগির একটা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে তারিখ চূড়ান্ত করে জানিয়ে দেয়া হবে। অক্টোবরের শেষে কিংবা নভেম্বরে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করা হতে পারে।
সূত্র আরো জানায়, স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা এবং জাতীয় নির্বাচনের কারণে এ বছর সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করা কঠিন। তবে অসম্ভব নয়। এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হবে সেপ্টেম্বরে। এরপর অক্টোবরের সময়টাতে কোনো পরীক্ষা নেই। কাজেই ওই সময় পরীক্ষা আয়োজনের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি সভায় চূড়ান্ত করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানান, নির্বাচনের কারণে এ বছর অনেক পরীক্ষাই এগিয়ে আনা হচ্ছে। এরই মধ্যে আমরা প্রাথমিকের শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য এ বছরেই পরীক্ষা আয়োজন করতে চাই। এজন্য আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করেছি। বুয়েটসহ অন্যদের সাথেও আলোচনা করব। সবার সাথে আলোচনা করেই পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।
এ দিকে ডিপিই সূত্র জানায়, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অধিদফতরকে কারিগরি সহায়তা দিয়ে থাকে বুয়েট। এজন্য প্রতিবারই তাদের সাথে আলাদা করে চুক্তি করা হয়। শিগগিরই বুয়েটের সাথে নতুন করে চুক্তি করবে অধিদফতর। এরপরেই পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে সামগ্রিক প্রস্তুতি নেয়া হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম মাহবুব বলেন, নিয়োগ কার্যক্রমের কারিগরি সহায়তা দেয় বুয়েট। তারা ফলাফল তৈরির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে। নতুন করে আমাদের চুক্তি হয়নি। দ্রুতই এটি হয়ে যাবে বলে আশা করছি। এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ ধাপে আবেদনের শেষ সময় ছিল ২৪ মার্চ। প্রথম ধাপে আবেদন জমা পড়ে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৭০০টি।
দ্বিতীয় ধাপে ২৩ মার্চ ময়মনসিংহ, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদনের শেষ সময় ছিল ১৪ এপ্রিল। দ্বিতীয় ধাপে আবেদন জমা পড়ে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৪৩৮টি। এরপর ১৮ জুন তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এ ধাপে আবেদন শেষ হয় গত ৮ জুলাই। তৃতীয় ধাপে আবেদন জমা পড়েছে ৩ লাখ ৪০ হাজারের কিছু বেশি।
প্রথম দিকে সাড়ে সাত হাজার পদে শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। একই সাথে জানানো হয়, শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনে বেশি সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। প্রাথমিক অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ সংগৃহীত তথ্যানুযায়ী সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের আট হাজার ৬৮টি পদ শূন্য রয়েছে।