1. mdjoy.jnu@gmail.com : admin : Shah Zoy
  2. satvsunamgonj@gmail.com : Admin. :
সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩১ অপরাহ্ন
  •                          

হাওরাঞ্চলের কথা ইপেপার

ব্রেকিং নিউজ
শ্রীমঙ্গলসহ সিলেট বিভাগ পর্যটনের জন্য একটা আকর্ষনীয় অঞ্চল ——প্রধান উপদেষ্টার মূখ্য সচিব ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর ও জাফলংয়ের পাথর লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা —জেলা প্রশাসক দিরাই -শাল্লার সার্বিক উন্নয়নের জন্য জমিয়তে উলামের মনোনিত ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে সংসদে পাঠানোর আহবান কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ড. শুয়াইব আহমদ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন থাকবে কিনা সময়ই বলে দেবে – সিলেটে সিইসি ধর্মপাশায় ডাঃ রফিক চৌধুরী হাইস্কুলের ক্যাম্পাস উদ্ভোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা শাল্লায় এক প্রবাসীর বাড়ীতে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্ষতিগ্রস্থরা নির্বাচনের কথা শুনলেই অনেক উপদেষ্টার মুখ কালো হয়ে যায়: মেজর হাফিজ সিলেট আলহামরা শপিং সিটি’র নুরানী জুয়েলার্সে রহস্যজনক চুরি ভোলাগঞ্জে টাস্কফোর্সের বড় অভিযান সুনামগঞ্জ-৪ আসনে জমিয়তের মনোনয়ন প্রত্যাশী   মুখলিছ চৌধুরীর গণসংযোগ ও নির্বাচনী প্রচারনা

দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় উদ্বেগ উৎকন্ঠায় সিলেটের প্রবাসীদের পরিবার ও পরিজন

Reporter Name
  • আপডেট করা হয়েছে শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪
  • ১১৩ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:

সরকারী চাকুরীতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় অতিবাহিত করছে সিলেটের লাখো পরিবার। প্রবাসীরাও স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে এবং দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে মানসিক যন্ত্রনায় অতিবাহিত করছেন তাদের জীবন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ইন্টারনেট খুলে দেয়ার দাবী সিলেটের প্রবাসীদের পরিবার ও স্বজনদের।

জানা যায়, সিলেট বিভাগের ৪২টি উপজেলার লাখ লাখ মানুষ প্রবাসে থাকেন এবং তারা দেশের অর্থনীতির চাকাকে ঘুরাতে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন। তাদের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়েই চলে দেশের অর্থনীতির চাকা। ইন্টারসেবা বন্ধ থাকায় দেশ থেকে বিদেশে কিংবা বিদেশ থেকে দেশে তারা পরিবার পরিজনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না। আরও সরাসরি মোবাইল ফোনে কথা বলতে গেলে অনেক টাকা বিল পরিশোধ করতে হয়। কোটা বিরোধী আন্দোলনকে সামাল দিতে সরকার ইন্টারনেট বন্ধ রেখেছে। ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় প্রবাসীদের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিয়োজিত হাজার হাজার যুবক যুবতী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

সিলেট নগরীর আখালিয়া বড়বাড়ি এলাকার বাসিন্দা সোনিয়া আক্তার। তার স্বামী জাকির হোসেন কুয়েত প্রবাসী। সাত বছর বয়সী কন্যা সন্তান ও পরিবারে কয়েকজন সদস্য নিয়ে বসবাস করছেন। চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনের ফলে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘ ধরে সোনিয়া তার স্বামীর সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তাই অনেক উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিনাদিপাত করছেন।

সোনিয়া আক্তার জানান,  ১০ দিন হয়ে গেলো আমার স্বামীর সাথে কোনো যোগাযোগ করতে পারছি না। এত বছর ধরে ইমু, হোয়াসঅ্যাপে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু এখন মোবাইলে ইন্টারনেট নাই। তাই কোনো যোগাযোগ করতে পারছি না। আমার স্বামী গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকবার মোবাইলের সিমের নাম্বারে আইসডি কল দিয়েছেন। কিন্তু কল রিসিভ করলেও কিচ্ছু শোনা যায় না। আমার মেয়েটা তার বাবার সাথে প্রতিদিন কথা বলতো। এখন কথা বলতে না পাড়ার অনেক কান্নাকাটি করে। সরকারের এভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করা কোনোভাবেই সঠিক হয়নি।

সিলেট নগরীর আম্বরখানা এলাকার বাসিন্দা সোহেল আহমদ জানান, আমার এক ভাই কাতার ও আরেক ভাই ফ্রান্স প্রবাসী। বিগত কয়েকদিন যাবত তাদের সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে তিনিও অনেক দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। তিনি আরও  বলেন, আন্দোলন সামলাতে না পেরে সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে। সরকারের ভুলের খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে। আমার ভাই জালাল আহমদ কাতার প্রবাসী। আরেক ভাই আরিফ আহমদ ফ্রান্স প্রবাসী। তাদের সাথে সবসময় ইন্টারনেটে যোগাযোগ করেছি। এখন বিগত ১০দিন যাবত কোনো যোগাযোগ নাই। তারাওতো শুনেছে দেশে আন্দোলন চলছে। এরপরই সবধরনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা যে ভাল ভাল আছি এই খবরটিও তাদের দিতে পারছি না। চলমান পরিস্থিতিতে আমরা যত দুশ্চিন্তায় আছি তার চেয়েও বেশি দুশ্চিন্তায় তারা আছে।

কোটা সংস্কারের দাবীতে গত ১৫ জুলাই থেকে সারা দেশে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ ছাত্রলীগের হামলার পর এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নেয়।  সারাদেশে দুইশতাধিক  শিক্ষার্থীসহ সাধারন মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে দুই হাজারের বেশী মানুষ। এই নিহতের তালিকায় সাংবাদিক, পথচারী, পুলিশ, সাধারণ মানুষও রয়েছেন।

এই আন্দোলন সহিংস রূপ নিলে প্রথমে মোবাইল সিমের কোম্পানিরা নেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপর ১৮ জুলাই রাতে ওয়াইফাই সংযোগও বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার ফলে সারা বিশ্বের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। বর্তমানে প্রবাস থেকে কোনো আইসডি কল আসলেও কোনো কথা শুনা যায় না। এমনকি দেশের বাইরে অন্য কোনো দেশে আইএসডি কল করলেও কোনো কথা শুনা যায় না।

মঙ্গলবার রাত থেকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারন্টে চালু হলেও বন্ধ রয়েছে ফেসবুক, হোয়াটঅ্যাপসহ সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ফলে প্রবাসীরা পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৬৩টি দেশে প্রায় ১ কোটির উপরে প্রবাসী রয়েছেন। তার মধ্যে সিলেট বিভাগের চার জেলার ৪২ উপজেলায় ২ লাখের উপরে মানুষ ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে বসবাস করছেন।

এই লাখ লাখ প্রবাসী প্রতিদিনই তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে হোয়াটসঅ্যাপ, ইমু, মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন। এইসব যোগাযোগের মাধ্যমের চালিকা শক্তি হল ইন্টারনেট। কেউ মোবাইল ডাটা দিয়ে কেউবা ওয়াইফাই সংযোগের মাধ্যমে এসব অ্যাপ ব্যবহার করেন। কিন্তু চলমান এই অস্থির পরিস্থিতিতে দেশে সবধরনের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় সোনিয়া আক্তার ও কামাল আহমদের মত সিলেটের লাখ লাখ প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যরা দুশ্চিন্তায় দিনযাপন করছেন।

এ ব্যাপারে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক ও  অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, বাংলাদেশের যে অঞ্চল থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ বিদেশে কর্মসংস্থানে নিয়োজিত আছেন তাদের মধ্যে অন্যতম সিলেট বিভাগ। সিলেট বিভাগের চার জেলার দুই লাখেরও বেশি মানুষ প্রবাসে আছেন। এ অঞ্চলের প্রচুর লোকজন মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকাসহ নানা দেশে বসবাস করছেন। বহু বছর ধরে এই প্রবাসীরা মোবাইল ইন্টারনেটে হোয়াসঅ্যাপ, ইমুর মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করেন। কিন্তু এই সময়টাতে যারা দেশের বাইরে আছেন তারা দেশের খবর পাচ্ছেন না তাই দুশ্চিন্তায় আছেন। প্রবাসীরা পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না। এতে প্রবাসীরা ও দেশে থাকা তাদের স্বজনদের মধ্যে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকার কারণে বিদেশ যাওয়া আসা রেমিটেন্সসহ সবকিছুর উপরই খারাপ প্রভাব পড়ছে উল্লেখ করে শরিফুল হাসান জানান, প্রবাসীদের সাথে যোগাযোগ শুধু পারিবারিক কারণে না, রেমিটেন্সের কারণেও তাদের সাথে যোগাযোগ দরকার। প্রবাসীদের সাথে যদি চার পাঁচ দিন যোগাযোগ না থাকে, ইন্টারনেট না থাকে তাহলে কিন্তু বিদেশ থেকে রেমিটেন্স পাঠানোর উপরও বেশ প্রভাব পড়বে। তাই আমার কাছে মনে হয় প্রবাসীদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নের সবচেয়ে বড় প্রভাব সিলেট বিভাগের উপর পড়বে। আশা করি সরকার খুব দ্রুতই ইন্টারনেট চালু করবে। প্রবাসীদের সাথে যোগাযোগ স্বাভাবিক হবে। তাছাড়া যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলে ফ্লাইটে একজন যাত্রী কখন যাবে কখন আসবে এগুলো নিয়ে বিদেশগামীরা এবং বিদেশ থেকে আগতরা বেশ ভোগান্তিতে পড়ছেন। আশাকরি সরকার এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন