নিউজ ডেস্কঃ সোহেল রানা, নীলফামারী: উজানের পাহাড়ী ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তার পানি আবারও বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে। শুক্রবার গভীর রাত থেকে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও আজ শনিবার সকাল থেকে ৩ সেন্টিমিটার কমে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এতে পানিবন্দী হয়েছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী, খগাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ি ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের নিম্ন অঞ্চলের দেড় শতাধিক পরিবার। চরম আতঙ্কে দিনযাপন করছেন তিস্তার পারের ঐসব অঞ্চলের মানুষেরা।
ডালিয়া পওর বিভাগের নুরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিন ধরে তিস্তার পানি থেকে থেকে কমছে আর বাড়ছে। ডিমলা তিস্তার চরাঞ্চলের ৫টি ইউনিয়নের বাড়ি ঘরে পানি টইটম্বুর। এতে চরম আতঙ্কে রাত যাপন করছে শত-শত পানিবন্দি মানুষ।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝারশিংঙ্গেশ্বর এলাকার কৃষক বদিউজ্জামাল, নুর হোসেন জানান, তিস্তার পানির কারণে এই কয়েকদিনে অনেক জমিনের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। নদীতে বিলীন হয়েছে অনেক জমিন। টেপাখরি বাড়ি ইউনিয়নের চরখরি বাড়ি এলাকার জাহানারা বলেন, বাড়িতে পানি ঢোকার জন্য রাতে ঘুমাতে পারিনা। কয়েকদিন ধরে চুলোয় আগুন জ্বালাতে পারিনি, বাড়িতে শুকনো চিড়া-মুড়ি দিয়ে দিন পার করছি।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ খান বলেন, গত রবিবার রাত থেকে তিস্তার তীরবর্তী অঞ্চলে বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নিম্ন অঞ্চলগুলো। আমরা লোকজন কে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছি এবং বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছি।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাফউদ্দৌলা বলেন, পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে এবং পওর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সজাগ থাকতে নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার কথা বলা হয়েছে।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, তিস্তার বন্যায় প্লাবিত এলাকা গুলোর বিষয়ে ডিমলা উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে, বন্যা কবলিত লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,এবং বন্যা বিষয়ে প্রশাসন সর্বক্ষণ সতর্ক রয়েছে।