সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের নয়াহাট গ্রামের বাজিতপুর থেকে আনোয়ারপুর বাজার পর্যন্ত ২০ বছর ধরে হাওরের ফসল রক্ষা বাধ নির্মিত হয়ে আসলেও হঠাৎ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তের কারণে নতুন করে এলাইমেন্ট পরিবর্তন করে বৌলাই নদীর পশ্চিম পাড় দিয়ে অপরিকল্পিত বাধ নির্মান করার অভিযোগ স্থানীয়দের। সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ বছর ধরে যে রাস্তা দিয়ে হাওরের ফসল রক্ষা বাধ নির্মিত হয়ে আসছেন সেই বাধ পরিবর্তন করে চারগুণ অর্থ ব্যয়ে স্থানীয় কৃষকের জমির উপর দিয়ে বাধঁ নতুনভাবে তৈরী করা হচ্ছে। যাদের ফসল রক্ষায় সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছেন তাদের ফসলী জমিই বিনষ্ট করে ফসলি জমি উপর দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। সুষ্টু তদন্তের মাধ্যমে নতুন বাধ নির্মান কাজ বন্ধ করে পুরাতন বাঁধের উপর দিয়ে পাউবো’র বাঁধ নির্মানের দাবি জানিয়েছেন ভোক্তভোগি কৃষকদের। চলতি বছরও জেলার ১২টি উপজেলায় ২০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৮৯টি পিআইসি’র মাধ্যমে ৭৫৪ কি:মি: ফসল রক্ষা বাধ নির্মিত হচ্ছে। তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরি ইউনিয়নের শনির হাওরের ৩নং পিআইসির বাঁধ নির্মাণে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। ২০ বছর ধরে কৃষকের হাওরের ফসল রক্ষায় পাউবো ইউনিয়নের নয়াহাট গ্রামের ফাজিলপুর থেকে আনোয়ারপুর বাজার পর্যন্ত বাঁধটি নির্মান করে আসছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেই ধারা বাহিকতা বাধ দিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন ও বাবুল মেম্বারের একক সিদ্ধান্তে কৃষকদের মতামত ছাড়াই ব্যক্তি মালিকানাধীন ফসলী জমির উপর দিয়ে এলাইনমেন্ট পরিবর্তন করে বাধ নির্মান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েও ফসল রক্ষা করতে পারছে না। বিষয়টি পানি উন্নয়ণ বোর্ডের কর্মকর্তাদের অবগত করলেও পাত্তা দিচ্ছেন বলে কৃষকদের অভিযোগ। দক্ষিন কুল গ্রামের কৃষক আলমগীর জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল মিয়া ও চেয়ারম্যান আজাদ হোসেনকে আমার জায়গার উপর দিয়ে বাধ নির্মান না করার জন্য অনুরোধ করলেও তারা মানছেন না। পারিবারিক শত্রুুতার জের ধরেই উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে আমাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন ফসলী জমির উপর দিয়ে বাধ নির্মান করা হচ্ছে। এই বাধ নির্মানের ফলে একদিকে আমাদের ফসলী জমির ক্ষতি অন্যদিকে সরকারের কোটি টাকা লুটপাট করার ফন্দি। পূর্বে বাধের উপর দিয়ে বাধ নির্মিত হলে আমাদের জমি জমা ও ঘরবাড়ী রক্ষার পাশাপাশি সরকারের প্রচুরঅর্থ সাশ্রয় হতো। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া জানান, হাওরের ফসল রক্ষায় পাউবো বাধ নির্মান করছে। যে দিকে বাধ নির্মান করা হলে ফসল রক্ষা পাবে সেই দিকেই বাধ নির্মান করা হচ্ছে।
শনির হাওরে বাঁধ ও স্থায়ী রাস্তা নির্মাণের কথা শিকার করে বালিজুড়ি ইউনিয়নের বালিজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন জানান, শনির হাওরের সব চেয়ে বড় বাধ এটি। ৩নং পিআইসির নতুন বাঁধ নির্মান সর্ম্পকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। বাধ নির্মানে কাহারো কোন অভিযোগ থাকলে স্থানীয়দের নিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ণ বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান,
বালিজুরি ইউনিয়নের শনির হাওরের ৩নং পিআইসি’র অধিনে হাওরের ফসল রক্ষা বাধ নির্মানে কোন কৃষকের ফসল বিনষ্ট করা যাবে না। পূর্ব অনুমতি ছাড়া এলাইনমেন্ট পরিবর্তন করা যাবে না। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ইউপি চেয়ারম্যানকে বলে দিয়েছি স্থানীয় জনগনকে নিয়ে বসে বিষয়টির সমাধান করার জন্য।