নিউজ ডেস্কঃ সিলেটে সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টা ৪৯ মিনিট ২৯ সেকেন্ডে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ৫.৫ মাত্রার এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিলো সিলেটের কানাইঘাট ও ভারতের মেঘালয় মিলে তৈরি হওয়া ‘ডাউকি ফল্ট’ বা ‘ডাউকি চ্যুতি’। আর এই ‘ডাউকি ফল্ট’-ই সিলেটের জন্য আতঙ্ক। কারণ- সেখানে ভূমিকম্প বাড়ছে। এটা সিলেটসহ সারা দেশে বড় ভূমিকম্পের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন- গত ২০ বছরের মধ্যে সোমবারের ভূমিকম্প ছিলো সবচেয়ে বেশি মাত্রার। ভূমিকম্পটি হয়েছে বাংলাদেশের ভূগর্ভের ডাউকি চ্যুতি নামে পরিচিত চ্যুতিরেখা বা ফাটল বরাবর। এর উৎস ছিল ঢাকা থেকে ২২৮ কিলোমিটার দূরে সিলেটের কানাইঘাট ও ভারতের আসাম সীমান্তের কাছে। ভূগর্ভের ১০ কিলোমিটার গভীরে এর উৎপত্তি। ভূমিকম্পটির কম্পন সিলেটসহ সারা দেশে বেশ অনুভূত হয়েছে। গত কয়েক বছরে ডাউকি চ্যুতিরেখায় বেশ কিছু ভূমিকম্প হয়েছে। বাংলাদেশের সিলেট ও ভারতের আসাম মিলিয়ে ডাউকি চ্যুতি পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় তিন শ কিলোমিটার বিস্তৃত। ১৮৯৭ সালে ‘ডাউকি ফল্টে’ ৮ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছিল। আর এখন এটা বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা জাগাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্যমতে- কোনো ভূমিকম্পের মাত্রা ৫-এর উপরে গেলে তাকে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প বলা হয়। এর নিচে হলে তাকে মৃদু কম্পন হিসেবে গণ্য করা হয়। দেশে গত এক বছরে তিনটি ৫ মাত্রার বেশি ক্ষমতার ভূমিকম্প হয়েছে। সোমবারেরটির বাইরে বাকি দুটি হলো ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট ৫ দশমিক ১ মাত্রা এবং গত ২৩ জানুয়ারি ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প। সবমিলিয়ে গত এক বছরে বাংলাদেশে ১৭টি ভূমিকম্প হয়েছে। বেশির ভাগের মাত্রা ছিল ৪ থেকে ৫-এর মধ্যে। তবে গত ২০ বছরের রেকর্ড ভেঙে সোমবার সাড়ে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের হিসাবে, সবচেয়ে তীব্র ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা ও সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকা।
এই অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন- সিলেটসহ সারা দেশে সচেতনতামূলক প্রস্তুতি বাড়াতে হবে এবং ভবনগুলোকে ভূমিকম্পন–সহনশীলভাবে তৈরি করতে হবে।