বাংলদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জামালগঞ্জ উপজেলার জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের আয়োজনে কর্মী সভায় এক বক্তার বক্তব্যে ”জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ” স্লোগান উচ্চারিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উপজেলাব্যাপী দলীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সর্বত্রই চলছে একই আলোচনা। সবার মনেই প্রশ্ন জেগেছে যেই ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারকে উৎখাত করতে বিএনপি দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর আন্দোলন করেছে , হাজার হাজার নেতাকর্মী খুন্গু—ম হয়েছে। বর্তমান সময়ে বিএনপির সভায় বক্তব্যকালে কেন উচ্চারিত হল ”জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ‘ স্লোগান? এরই রহস্য খুঁজছেন উপজেলাবাসী।
জানা যায় , শুক্রবার উপজেলার স্থানীয় সাচনা বাজারে কর্মী সভার আয়োজন করে জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন বিএনপি।
জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আক্কাস মুরাদের সভাপতিত্বে ও জামালগঞ্জ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ হিরন মিয়ার সঞ্চালনায় সভা শুরু হয়।
কর্মী সভায় অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত হন এবং বক্তব্য প্রদান করেন। তবে সভায় ও সভায় যোগদান কালে দলীয় স্লোগানের পরিবর্তে সারাক্ষণ ”মাহবুব ভাইকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই ” মাহবুব ভাইয়ের ঘাঁটি , জামালগঞ্জের মাটি ” এমন স্লোগানেই মুখরিত ছিল। সভায় বক্তব্যকালে সৈয়দ দিন ইসলাম স্বপন নামের এক বক্তা বক্তব্যের শেষ প্রান্তে । ”জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ” স্লোগান দেন।
এ ছাড়াও জানা যায় , সভায় উপস্থিতি মেলে জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম মোহনের , যাঁকে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে ও কোন প্রকার দলীয় কার্যক্রমে সম্পৃক্ত না থাকার কারণে ১৫ই এপ্রিল ২০২৩ সালে দল থেকে বহিস্কার করা হয়।
মোহন বিএনপির দায়িত্বশীল ব্যক্তি থাকা সত্ত্বেও তখন আওয়ামীলীগের নেতাদের সাথে প্রকাশ্যে সম্পর্ক রেখে নিজ স্বার্থ হাসিল করতেন। জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল হুদা মুকুটকে দায়িত্ব পাওয়ার পর মোহন ফুল দিয়ে বোরন করেন এর একটি ছবি প্রকাশ্যে এসেছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। উপজেলার সচেতন নাগরিক তথা বিএনপির নেতাকর্মীদের মনে প্রশ্ন জেগেছে যে উক্ত কর্মী সভায় অনেক সিনিয়র নেতা উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কি করে বহিস্কৃত ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক মোহন দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে ? আরো প্রশ্ন উঠেছে যে , জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন ফারুকী কর্মিসভায় আমন্ত্রণ পাননি ? যেখানে জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক উক্ত কর্মী সভার বিষয়ে অবগত নন তাহলে কে বা কারা কার নির্দেশনায় উক্ত কর্মিসভার আয়োজন করেছে ? এর পেছনের রহস্যইবা কি ? আর কেন বিএনপির সভায় জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান হবে ? এবিষয়ে জালাল উদ্দিন ফারুকীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান , শুক্রবারের এই কর্মী সভার যারা আয়োজন করেছে তাদের সবাই পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ভাবে কোন কোন কাজে আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত। যার ফলে এই কর্মী সভাকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রত্যাখ্যান করছি। উত্তর ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আলী আক্কাস মুরাদ বিগতদিনে যখন বিএনপির নির্বাচন হয়েছে তখনই নীরব রয়েছেন এমনকি তাঁর নিজ সেন্টারে ধানের শীষের ভোট শুন্য ছিল। বহিঃস্কৃত সাধারণ সম্পাপদক মোহন ২০১৮ সালে দিকে বিনপির কোন কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করেন নাই সর্বক্ষণ প্রকাশ্যে জেলা আওয়ামীলীগের সহ —সভাপতি রেজাউল করিম শামীমের সাথেই আওয়ামীলীগের কার্যক্রমে তাকে দেখা যেত।
এ নিয়ে ফেসবুকে প্রতিবাদ করে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন দলীয় প্রকৃত নেতা কর্মীরা। একজন লিখেছেন ”জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির ডাকা কর্মী সভায় বক্তব্য চলাকালীন অবস্থায় জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে স্লোগানে মুখরিত করে দিলেন,মঞ্চে থাকা দুই নেতা এই বিষয় নিয়ে পুরো উপজেলা তোলপাড়, উপজেলা বিএনপির নেতা কর্মীরা মনে করছেন প্রভাব শালী কোন নেতা নিজের দলকে বারি করার জন্য, নিজ দলে নিয়ে দিচ্ছেন ফ্যাসিস আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের,, এতে বিএনপির আগামী ভবিষ্যত খুব খারাপ হতে পারে বলে মনে করছেন দলের অনেক নেতা সাধারণ কর্মীরা,আবার কারো মুখে শোনা যাচ্ছে বিগত সতের বছর যাবত যারা দলের জন্য জেল জুলুম কেটেছেন, তারা অনেকেই এখানে অনুপস্থিত ,, আর যারা বিগত দিনে আওয়ামিলীগ কে সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন,,তারাই আজকে একদিকে ১ আসনের মাটি মাহবুব ভাইয়ের ঘাটি, অন্য দিকে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে কাপিয়ে দিলেন বিএনপির মঞ্চ।”