অবৈধ ক্ষমতার দাপটে নীরিহ মানুষের ভোগ দখলে থাকা সরকারি খাস জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে।
দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি ও মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ এনে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের পুত্র আব্দুল কুদ্দুস (৫০) এর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগটি দায়ের করেন একই গ্রামের মৃত আমান উল্লাহ’র পুত্র রুবেল আহমদ (৩৫)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আব্দুল কুদ্দুস একজন ভূমিখোকো, পরসম্পদলোভী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। অভিযোগকারীর আপন চাচাতো ভাই হওয়ার সুবাধে ভূমিখেকো আব্দুল কুদ্দুসের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো।
এরই সুবাধে সাবেক সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এড.পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ’র দলীয় কর্মী হওয়ার কারনে অবৈধ ক্ষমতার অপব্যাবহার করে অভিযোগকারীসহ এলাকার বেশ কয়েকজনের নামে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করাসহ জোরপূর্বক জায়গা-জমি দখল করে নিচ্ছে।
এছাড়াও আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী ভূমি অফিসে চাকরি করার সুবাধে ক্ষমতার অপব্যাবহার করে এলাকার অনেক নিরীহ লোকজনকে জিম্মি করে ভূয়া মাঠ পর্চা তৈরী করে অনেক জায়গা-জমি জোরপূর্বক দখল করে নিচ্ছে।
মিথ্যা মামলা, হুমকি দামকিসহ অবৈধ ক্ষমতার দাপটের কাছে নিরুপায় হয়ে বাড়িছাড়া থাকার কারনে এলাকার অনেক মানুষের জায়গা-জমি জোরপূর্বক দখল করে সেই সাথে তাদের অনুপস্থিতির কারনে নিজের খেয়াল খুশিমত জায়গার রায় তার অনুকূলে এনে অনেক জায়গা নিজের নামে করে নেয়।
এছাড়াও এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আব্দুল কুদ্দুছ সরকারি বিভিন্ন খাস জমি, গো-চরণ ভূমি, সরকারি খাল-বিল দখল করে নিচ্ছে। তার পৈতৃক ও ক্রয়করা সম্পদের পরিমান আনুমানিক ২০ একর হলেও ভূমিহীন সেজে সরকারী খাস জমি হাতিয়ে নিচ্ছে।
তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে হামলা, মামলাসহ প্রাননাশের হুমকি প্রদান করে। ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের নিয়ে ঘরবাড়ি ছাড়া করে জেলা হাজতে প্রেরণ করবে বলে প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে। সে কোন বিচার শালিসের তোয়াক্কা না করে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে মিথ্যে ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করে। সেই সাথে বাদীর ভোগদখলে থাকা সরকারি খাস ভূমি নানা পায়তারায় হাতিয়ে নেয়। এছাড়াও এলাকায় যে সকল জায়গা জমিতে ত্রুটি রয়েছে সে সকল ভূমির ভূয়া মাঠ পর্চা তৈরী করে নিজের জায়গা বলে প্রচার করে। কেউ এর প্রতিবাদ করলে তার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের করে হয়রানি করে।
এ ব্যপারে অভিযোগকারী রুবেল আহমদ জানান, আব্দুল কুদ্দুছ আমার চাচাতো ভাই হওয়ার সুবাধে তার সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তিনি আমাদের নামে অহেতুক মিথ্যে মামলা দিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করছে। শুধু আমাদের পরিবার নয় গ্রামের আরো অনেক মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে নানা উপায়ে ক্ষয়ক্ষতি করে আসছে। অবৈধভাবে সরকারি খাসজমি দখল করে হাতিয়ে নিচ্ছে। এর প্রতিবাদ করতে গেলেই আমাদের হামলা, মামলার শিকার হতে হয়। আমরা নিরুপায় হয়ে এখন আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছি। আমাদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নাই। আমরা এ ভূমিখেকোর হাত থেকে বাঁচতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যপারে অভিযুক্ত আব্দুল কুদ্দুস জানান, আমি এ ধরনের কোন খারাপ কাজ করি না। যারা এ অভিযোগ করেছে তারা খারাপ প্রকৃতির লোক। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটা করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এ ব্যপারে পুলিশ সুপার আ.ফ.ম আনোয়ার হোসেন খাঁন জানান, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টির তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এসআই মহিন উদ্দিনকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে।