স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট বিভাগের বহুল প্রচারিত দৈনিক হাওরাঞ্চলের কথা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক, শিক্ষানবীশ আইনজীবী মোহাম্মদ মাহতাব উদ্দিন তালুকদারকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছে তথ্য সন্ত্রাসী ফয়সল এবং কাল্পনিক তথ্য উপস্থাপন করে মিথ্যা অভিযোগকারীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী।
বিভিন্ন সুত্র জানায়, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা কালাকোনা গ্রামের নৌকার মাঝি মনাই মাঝির পুত্র সিলেট সরকারী কলেজের সাবেক শিবির কর্মী (সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বহিস্কৃত) মো: ফয়সল আহমদ এর সাথে ২০২১ সালের শেষের দিকে পরিচয় হয় দৈনিক হাওরাঞ্চলের কথা’ সম্পাদক ও প্রকাশক এবং বর্তমান গ্লোবাল টিভির সিলেট ব্যুরো ইনর্চাজ মাহতাব উদ্দিন তালুকদারের সাথে। সম্পাদক মোহাম্মদ মাহতাব উদ্দিন তালুকদার তার নিজস্ব পত্রিকাটি সিলেট বিভাগীয় শহর থেকে প্রকাশনার জন্য মোহনাটিভি’র সিলেট ব্যুরো প্রধান এ এ চৌধুরী শিপারের সাথে কথাবার্তা বলেন এবং গেল বছরের অক্টোবর মাসে হক সুপার মার্কেটের ৩য় তলায় একটি অফিস ভাড়া নেন। যে ঘরটির ভাড়াটিয়া ছিলেন দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার সিলেট প্রতিনিধি আশরাফ চৌধুরী রাজু। তার কাছ থেকে অগ্রিম ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করে মাসিক ৬ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। ভাড়া নেয়ার পর গেল ডিসেম্বর মাসে ঘরটি দৈনিক হাওরাঞ্চলের কথা’র সম্পাদক ও প্রকাশককে বুঝিয়ে দিলেও মালিকের সাথে কোন ধরনের চুক্তি করিয়ে দিতে চায় না সাংবাদিক রাজু। পরবর্তীতে ঘরের মালিককে খুজে মালিকের সাথে দেখা করে ঘরের ভাড়া প্রদান করতে গেলে ঘরের মালিক জানান, সাংবাদিক রাজু’র কাছে তার ৩ বছরের ঘর ভাড়া পাওনা রয়েছে। সে কারনে তিনি সম্পাদকের কাছ থেকে ঘর ভাড়া নিতে পারবেন না। বিষয়টির সমাধানের জন্য হক সুপার মার্কেটের সভাপতিকে অবহতি করলে তিনি মালিকের সাথে কথা বলেন এবং ঈদের পর পর বিষয়টির সমাধান করা হবে বলেও জানান। এ দিকে ফয়সল আহমদ সম্পাদকের পত্রিকা অফিসে কিছু দিন আসা যাওয়া করতেন এবং তার সাথে সক্ষ্যতা গড়ে তুলেন। সম্পাদকের ৪টি ডেস্কটপ ও ৩টি ল্যাপটপ মেরামতের কথা বলে ২৫ হাজারটাকা নিয়ে লাপাত্তা হয় ফয়সল। পরবর্তীতে চারটি ডেস্কটপ, ২টি ল্যাপটপ উদ্ধার করলেও একটি ল্যাপটপের যন্ত্রাংশ বিক্রি করায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে সম্পাদকের সাথে ফয়সলের মতবিরোধ দেখা দেয়। পরবর্তীতে গেল সিলেট সিটি নির্বাচনের আগের দিন ২০ জুন সম্পাদক তার পত্রিকার ২জন স্টাফসহ তিনজনের নির্বাচনী সাংবাদিক পাস কার্ড গ্রহন করেন এবং রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিবগঞ্জস্থ সাফরান রেস্টুরেন্টে সাংবাদিক হুমায়ুন কবিরকে নিয়ে নাস্তা করতে গেলে ঐ সময় পীরের বাজার এলাকার সাংবাদিক কামরুল ইসলাম জয় ও দৈনিক আমাদের মাতৃভুমির রিপোর্টার রায়হান উদ্দিন দেখা করতে আসেন এবং রাস্তা খাওয়া অবস্থায় রায়হান উদ্দিনকে দেখে তথ্য সন্ত্রাসী ফয়সল ক্ষেপে যায় এবং তাকে উঠিয়ে নিবে বলে হুমকি দেয়। এ সময় সম্পাদক তাকে বাধা দিলে ফয়সল ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। সাংবাদিক রায়হান জীবন বাচাঁতে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ০১৭১৯১৯৪৪৯৩ থেকে ৯৯৯ ফোন দিয়ে আত্মরক্ষা করে এবং শাহপরান থানার এসঅই সাইফুল ইসলাম তাকে উদ্ধার করে ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদে প্রস্তানের সুযোগ করে দেন। পরদিন নির্বাচন শেষে সম্পাদক বাসায় যাওয়ার পর ফয়সল রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফোন দিয়ে সম্পাদককে হুমকি দেন যে, কেন তার শত্রুু রায়হান ও জয়কে কার্ড দেয়া হলো? তার শত্রুকে কার্ড দেয়ায় সম্পাদককে প্রাণ নাশের হুমকি দেন এবং সম্পাদক সিলেট কোতোয়ালী থানায় জিডি দায়ের করেন। এখানেই ক্ষান্ত না থেকে সম্পাদককে উদ্দেশ্যে করে এবং ট্যাগ করে একের পর এক মানহানিকর শব্দ ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট দিতে থাকে। মানহানিকর শব্দ ব্যবহার করায় সম্পাদক ফয়সল আহমদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ফয়সল আহমদ বহু মানুষের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে মানহানিকর শব্দ ব্যবহার করে পোষ্ট দিয়েছেন এবং অনেকে মান সম্মানের ভয়ে তাকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বিষয়টি সমাধান করেছেন। তার বিরুদ্ধে গোলাপগঞ্জ থানায় একটি অপহরনের মামলা রয়েছে। ২০২১ সালে হেলাল আহমদ চৌধুরী নামের একজন কোতোয়ালী থানায় একটি জিডি দায়ের করেছেন। যার জিডি নম্বর: ৩০৪৬, তারিখ: ৩০/১০/২১ইং। জিডিতে উল্লেখ আছে, ফয়সল তাকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেস্টা করেছিল। ফয়সল আহমদ এর কোন পেশা নাই। ব্ল্যাকমেইলিং করাই তার মুল কাজ।
ফয়সলের তথ্য সন্ত্রাসের শিকার হেলাল আহমদ চৌধুরী জানান, ফয়সল আমাকে নানানভাবে হয়রানী করেছে। আমার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করেছিল। আমি থানায় জিডি করায় পিছু হঠেছিল। তার বিচার হওয়া দরকার।
আরও জানা যায়, সম্পাদক ও প্রকাশক মাহতাব উদ্দিন তালুকদারকে হুমকির ডিজিটাল ডিভাইসের রেকর্ডটি ওয়াটসপের মাধ্যমে মাননীয় সিলেট পুলিশ কমিশনার, সিলেট পুলিশ সুপার, র্যাবের মিডিয়া সেল, জেলা পুলিশের মিডিয়া বিভাগে প্রেরণ করে তাদেরকে অবগত করিয়েছেন। ফয়সল আহমদ লোক মারফত সম্পাদককে প্রস্তাব দেন যে, তাকে মোটা অংকের অর্থ না দিলে সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিসি এসপিসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করবেন এবং তাহাকে সিলেট শহর ছাড়া করবেন। এগুলো তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পোষ্ট করেছে। সম্পাদক ও পত্রিকার মানহানি ঘটাতে মিথ্যাচার করছেন। সম্পাদক নিজেই তার স্বজনদের নিয়ে কানাডা যাওয়ার চেষ্টা করছেন। অন্য কাউকে পাঠানোর কোন অভিযোগ কেউ করেননি। সম্পাদক কাউকে পুলিশের চাকুরী দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছেন এ ধরনের কোন অভিযোগও কেউ করেনি আর পুলিশের চাকুরী দেয়ার কোন এখতিয়ার সম্পাদকের নাই। এখানে দেশের সুনামধন্য পরিকল্পনামন্ত্রী আলহাজ্ব এম এ মান্নান এমপিকে রাগানোর জন্য নাতি বলে পরিচয় দেয়ার কোন ধরনের প্রমানাদি নাই। এ দিকে সুনামগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল আমিন চৌধুরী)কে উদ্দেশ্যে প্রনোদিতভাবে জড়ানোর চেস্টা করছেন।
ফয়সল আহমদ এর বক্তব্য জানতে চাইলে সে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমি যা অভিযোগ করেছি সব কিছুর তথ্য প্রমানাদি দিতে পারব।
দৈনিক হাওরাঞ্চলের কথা’ পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশক এবং গ্লোবাল টিভির সিলেট ব্যুরো প্রধান মোহাম্মদ মাহতাব উদ্দিন তালুকদার জানান, ফয়সল আহমদ একজন অত্যন্ত নিকৃষ্ট মনের মানুষ। তার সাথে আমার কোন শত্রুুতা নেই ছিলও না। তার শত্রুুদের নামে আমি সিটি নির্বাচনে নির্বাচনী পাস কার্ড পাইয়ে দিয়েছি। সে আমাকে হত্যাসহ সিলেট ছাড়ার হুমকি দিয়ে আসছে। আমি তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় জিডি দায়ের করেছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কাল্পনিক তথ্য উপস্থাপন করে যে অভিযোগ দায়ের করেছে সেটার প্রমাণাদি দিতে হবে। আমি জেলা প্রশাসনসহ পুলিশ প্রশাসনের সকলের কাছে সার্বিক সহযোগিতা চাই। আমি কোন অপরাধ করলে সেটারও বিচার হউক। পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন ভুয়া কাগজ দিয়ে নেয়ার সুযোগ নাই। আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর কোন তথ্য প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমার বাবা যে সম্পত্তি রেখে গেছেন তা দিয়ে একটি পত্রিকা কেন কয়েকটি পত্রিকা চালানো সম্ভব। আমি ফকিন্নির সন্তান না। হুমকি দাতা ও মিথ্যা অভিযোগকারীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে সিলেট কোতোয়ালী থানার ওসি আলী মাহমুদ জানান,দৈনিক হাওরাঞ্চলের কথা’ পত্রিকার সম্পাদক ও গ্লোবালটিভির সিলেট ব্যুরো প্রধান মাহতাব উদ্দিন তালুকদার একটি জিডি দায়ের করেছেন। প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।