স্টাফ রিপোর্টার:
সুনামগঞ্জ-১ আসনের বির্তকিত দুর্নীতিবাজ সাবেক এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনসহ আ’লীগ সরকারের আমলে দুদকের চিহ্নিত ১৫১জন দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী,এমপি ও আলমাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী সাধারন মানুষের।
জানা যায়, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন টানা তিনবারের এমপি হওয়ার সুবাধে গড়ে তুলেছেন বিশাল সম্পদ। দেশ বিদেশে ১৪টির বেশী আলিশান বাড়ী তৈরী করেছেন। গড়ে তুলেছেন বিশাল সম্পত্তি। ক্ষমতার অপব্যবাহর করে দলীয় প্রার্থীকে বাদ দিয়ে নিজের ছোটভাইকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়েছিলেন। নানান অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে চলতি বছরের জানুয়ারীতে অনুষ্ঠিত এক তরফা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ—১ আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হন এমপি রতন। সেখানে মনোয়ন দেয়া হয়েছিল সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রঞ্জিত সরকারকে। অবশ্যই ঐ বির্তকিত নির্বাচনে কেতলি প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করে পরাজয় হয়েছিল দুর্নীতিবাজ এমপি রতনের। রতনের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকমীর্দের বাদ দিয়ে অন্যান্য দলের নেতাদের বিভিন্ন উন্নয়মুলক কর্মকান্ড পরিচালনারও অভিযোগ ছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল হিন্দুদের সম্পত্তি জোরামুলে দখল করে আলীশাল ভবন তৈরী এবং জলমহালে এক জেলেকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগও ছিল। তৎকালীন সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানকে ব্যবহার করে জলমহালে এক জেলে খুনের ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে নিজেকে মামলা থেকে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছিল। সেই হত্যা মামলায় নিরীহ জেলেদের আসামী করে হত্যা মামলাটির চুড়ান্ত রিপোর্ট দিয়ে জেল হাজতে পাটিয়েছিল সাধারণ জেলেদের। এ দিকে মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের নানান দুর্নীতির খবর প্রকাশ করায় দৈনিক হাওরাঞ্চলের কথা পত্রিকার সম্পাদক ও এসএটিভি’র সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মাহতাব উদ্দিন তালুকদারকে বিনা অপরাধে কুখ্যাত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জেল কাটিয়েছিল। পরবতীর্তে ঐ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সিআইডি’র ফরেনসিক বিভাগ থেকে নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পরও ধর্মপাশা থানার এসআই খলিলুর রহমানকে দিয়ে আদালতে চার্জশীট দিয়ে হয়রানী করা হয়েছিল। সেই মামলাটি উচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ দিয়ে মামলার বাদীসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে রুলনীশি জারি করেছিল। এ ছাড়াও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সুনামগঞ্জ জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি সেলিম আহমেদ এর বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজীর মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছিল। রতন এমপি হওয়ার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক তলব করেছিল। ১৮ ফেব্রয়ারি ২০২০ তারিখে তাকে দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছিল। তৎকালীন দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের স্বাক্ষর করা চিঠিতে তাকে তলব করেছিল। ক্যাসিনো কাণ্ডে দুদক যে ১৫১ জনের তালিকা তৈরি করেছিল তাতে সুনামগঞ্জ—১ আসনের বির্তকিত এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের নাম ছিল এবং এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে ক্যাসিনো কান্ডে জড়িত, অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন, যাদুকাটা নদীতে চাঁদাবাজী, নদীর পাড় কেটে বালি উত্তোলন, তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক সমিতি থেকে অবৈধভাবে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়া, শুল্ক ষ্টেশন থেকে ক্ষমতার অপব্যবাহর করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়াসহ নানান অভিযোগ ছিল। তার নানান অনিয়ম দুর্নীতির কারণে তাকে বিদেশ গমনে বাধাসহ নামীয় ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছিল। এদিকে, যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র ক্রয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. আবু সুফিয়ানকে তলব করেছিল দুদক। দুদকের পরিচালক কাজী শফিকুল আলমের সই করা চিঠিতে ১৭ ফেব্রয়ারি ২০২০ তারিখে তাকে দুদকে হাজির হতে হয়েছিল। তৎকালীন তাদের বিরুদ্ধে সুষ্পষ্ট অভিযোগ থাকা সত্বেও কোন দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেনি দুদক। দুদক দেশের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন না করায় দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করেছিল। বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার হাসিনার আমলের দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী, এমপি ও আমলাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ সরকারী কোষাগারে জমাসহ তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করছেন।
গেল ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পাড়ি জমালেও তার মন্ত্রী পরিষদের অনেক মন্ত্রী এমপি ও দুর্নীতিবাজ নেতারা ধরা পড়ছে। অনেকে আত্মগোপনে রয়েছে। অনেকে সীমান্ত ফাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টার সময় আটক হয়েছেন। বেশীরভাগ দুর্নীতিবাজ মন্ত্রী ,এমপি ও আমলার এখনও ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছেন। দেশের শীর্ষ ঋণ খেলাপীদের অন্যতম সালমান এফ রহমান ধরা পড়লেও এস আলম গ্রুুপের কর্নধার হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পালিয়ে গেছেন। চিহ্নিত দুনীর্তিবাজদের বিরুদ্ধে যৌথবাহিনীর নেতৃত্বে চিরুনী অভিযান চালানোর দাবী সাধারণ মানুষের। পালিয়ে সাবেক এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক গ্রেফতার করারও দাবী জানানো হয়।